![অঢেল সম্পদের মালিক বিএনপি নেতা লেয়াকত, দুদকের মামলা 1 print news](https://dainikishan.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম (এস আলম) মাসুদের সঙ্গে সখ্যতার বদৌলতে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ লেয়াকত আলী ও তার স্ত্রী জেসমিন আকতার।
তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনিই মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি লেয়াকত আলীর সহায়তায় তার স্ত্রী জেসমিন আকতার ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স¤পদ অর্জন করেছেন। একইসঙ্গে জেসমিন দুদকে স¤পদ বিবরণী দাখিলের সময় ১ কোটি ৬ লাখ টাকার স¤পদের তথ্য গোপন করেছেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, লেয়াকত আলী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতা। এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সখ্যতার কারণে অঢেল স¤পদের মালিন বনে যান তিনি। এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদের সঙ্গে লেয়াকত আলীর সখ্যতার একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। বাঁশখালীর লোকজন এসব ছবি শেয়ার করে লেয়াকত চেয়ারম্যানের শাস্তি দাবি করছেন।
সূত্রমতে, ২০১৬ সালে বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু করে এস আলম গ্রুপ। শুরুতে বসতভিটা রক্ষা কমিটির ব্যানারে চেয়ারম্যান লেয়াকত প্রকল্পের বিরোধিতা করে অনুসারীদের নিয়ে আন্দোলনে নামেন। একপর্যায়ে ওই সালের ৪ এপ্রিল লেয়াকতের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হলে এতে প্রাণ হারান চারজন।
হতাহতের ঘটনার পরপরই লেয়াকতের সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হয় শিল্পগ্রুপ এস আলম। এক্ষেত্রে সহায়তা করেন নৌবাহিনীর তৎকালীন এক কর্মকর্তা। যিনি তখন কোস্টগার্ডের দায়িত্বে ছিলেন। ওই নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে গুম-খুনের জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে সখ্যতার পর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ভূমি ক্রয়-বিক্রয়, প্রকল্পে শ্রমিকসহ নানা মালামাল সরবরাহ এবং স্ক্র্যাপ ব্যবসার সবই ছিল লেয়াকতের নেতৃত্বে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সফেক্ট্রার সঙ্গে ঝামেলা করে এস আলমের ভরাট কাজ থেকে ৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন লেয়াকত। এসব টাকা দিয়ে লেয়াকত নিজে ও তার স্ত্রীর নামে প্রায় ১০০ বিঘা জায়গা ক্রয় করেন। এস আলমের সহায়তায় রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান লেয়াকত।
লেয়াকতের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি, পুলিশের ওপর হামলা, দস্যুতা, ভয়ভীতি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ২১টিরও বেশি মামলা রয়েছে। তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে ভয় পেতেন পুলিশ কর্মকর্তারা। লেয়াকতের বাসার আশপাশে সবসময় আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাহারা দেয় তার নিজস্ব বাহিনী।
লেয়াকত আলী ২০০৩ সালে প্রথম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিএনপি থেকে পরপর দুই বার বহিষ্কার হয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিএনপি নেতা লেয়াকত আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি সুইচ বন্ধ পাওয়া যায়।