মঙ্গলবার- ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা, দুশ্চিন্তায় যাত্রীরা

অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা, দুশ্চিন্তায় যাত্রীরা
print news

নির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে নামছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার থেকে রেল চলাচল বন্ধ রেখে কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় তারা। মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক দেওয়া এবং নিয়োগপত্রের দুই শর্ত প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মবিরতিতে নামছেন রানিং স্টাফরা।

রানিং স্টাফরা বলছেন, আমরা আগেই বলেছি সোমবারের (২৭ জানুয়ারি) মধ্যে দাবি না মানলে ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার থেকে কঠোর কর্মবিরতিতে নামবেন। এবার ‍মুখের কোনো আশ্বাস নয়, আদেশ পেলেই কর্মবিরতি থেকে পিছু হটবেন। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বিভিন্ন রুটের রেল যাত্রীরা।

তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন বলেছেন, দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চলছে। আমরা কিছুক্ষণ আগেও তাদের সাথে মিটিং করেছি। এরই মধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার রুটের পর্যটক এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেসের ২৮ জানুয়ারির সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের টিকেটও বিক্রির শেষ পর্যায়ে। আশা করি তারা কর্মবিরতিতে যাবে না। আগামীকাল সচিব স্যারসহ মিটিং হবে। তখন এ বিষয়ে সমাধান হবে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেন, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ১৬০ বছর ধরে অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছে। রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক—যেকোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখে রানিং স্টাফরা। তাঁদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসের বন্ধ নেই।

কিন্তু গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিজেদের দুর্নীতি ও অর্থ অপচয় ঢাকতে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের প্রাপ্যতার পক্ষে থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয় জটিলতা সৃষ্টি করছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্তে আমরা অনড়। ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকেই আমাদের কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু হবে। দাবি না মানলে কারো সঙ্গে কোন মিটিংয়ে বসতে আমরা রাজি না। আমরা বহুবার মিটিংয়ে বসেছি। এবার ‍মুখের কোনো আশ্বাস নয়, আদেশ পেলেই কর্মবিরতি থেকে পিছু হটবেন। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বিভিন্ন রুটের রেল যাত্রীরা।

সাদিয়া জাহান নামের একজন নারী বলেন, আমরা কক্সবাজার যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট নিয়েছি। অগ্রীম হোটেল বুকিং দেয়া আছে। এখন ট্রেন না চললে তো ঝামেলায় পরে যাবো। মাহফুজ আলম নামে এক যাত্রী রেলওয়ের একটি গ্রুপে জানতে চেয়ে পোস্ট করেছেন, আমরা যারা ২৮ তারিখের অগ্রিম টিকিট কেটেছি তারা এখন কি করবে?

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) অর্থ বিভাগের দেওয়া এক চিঠিতে জানানো হয় চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়মিত অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না রেলওয়ের কর্মীরা। চিঠিটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটিই) বোঝানো হয়েছে।

তাদের ভাষ্য, তারা ১৬০ বছর ধরে মাইলেজ–সুবিধা পাচ্ছিলেন। অর্থাৎ দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন। এছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show
error: Content is protected !!