মঙ্গলবার- ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালুর খবরে কমাতে শুরু করেছে বাস ভাড়া

কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালুর খবরে কমাতে শুরু করেছে বাস ভাড়া
print news

কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালুর খবরে কমতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটের বাস ভাড়া। ইতোমধ্যে বড় দুটি বাস কোম্পানি ১০০ টাকা পর্যন্ত তাদের ভাড়া কমিয়েছে। আরও কয়েকটি বাস কোম্পানি ভাড়া কমানোর পরিকল্পনা করছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, টানা দুই মাস কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালু থাকায় কমাতে শুরু করে বাস ভাড়া। ট্রেনটি চালুর আগে বাস মালিকরা তাদের কাছ থেকে যেমন খুশি তেমন ভাড়া আদায় করতেন। যাত্রী কমে যাওয়ায় তারা ভাড়া কমাতে বাধ্য হয়।

সূত্র জানায়, সৌদিয়া পরিবহনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া এখন ৩৩০ টাকা। যা আগে ছিল ৪২০ টাকা। সে হিসাবে সৌদিয়া কর্তৃপক্ষ ভাড়া কমিয়েছে ৯০ টাকা। পাশাপাশি লোহাগাড়া এবং কেরানীহাটগামী রুটের ভাড়াও কমিয়েছে এই পরিবহন কোম্পানি।

অন্যদিকে পূরবী পরিবহনও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া ১০০ টাকা কমিয়েছে। এই পথের নতুন ভাড়া ৩২০ টাকা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা আগে ৪২০ টাকা ছিল। এছাড়া ঈদগাঁ-চট্টগ্রাম, চকরিয়া-চট্টগ্রাম এবং কেরানীহাট-চট্টগ্রাম রুটের ভাড়াও কমেছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

জানতে চাইলে পূরবী পরিবহনের এমডি কাজল কান্তি দাশ জানান, যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ছাড়ের ফলে আরও বেশি মানুষ বাসে যাতায়াত করবেন। যাত্রীরা ভাড়া কমানোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই ছাড় অব্যাহত থাকবে।

কাজল কান্তি দাশ আরও বলেন, মানবিক কারণে যাত্রীদের সুবিধার্থে আমরা ভাড়া কমিয়েছি। যদিও কম ভাড়া নির্ধারণে পরিবহন মালিক সমিতিতে আমাকে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু সেটি উপেক্ষা করে যাত্রীদের আর্থিক দিক চিন্তা করে ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তবে বাস মালিকদের এই যুক্তি মানতে নারাজ স্থানীয়রা। সোলায়মান আলম নামে স্থানীয় একজন বলেন, বাস মালিকপক্ষ যাত্রীর প্রতি সদয় হয়ে নয়, টিকে থাকার সংগ্রামে ভাড়া কমিয়েছে। কারণ ট্রেন চালুর পর থেকে বাসের একচেটিয়া রাজত্ব কমেছে। মানুষ ট্রেনেই বেশি যাতায়াত করছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ মে থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় এই রুটের যাত্রীরা ফের বাস মালিকদের হাতে জিম্মি হবে বলে দাবি করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতিগুলোর নেতারা।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

তাদের দাবি, ইঞ্জিন ও ক্রু সংকটের অজুহাতে স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হলেও এর পেছনে বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশন রয়েছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, পরিবহন মালিকদের ষড়যন্ত্রের কারণেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। নাগরিক সমাজ দ্রুত এই স্পেশাল ট্রেন পুনরায় চালুর দাবি জানাচ্ছে। তবে সুখবর হচ্ছে-রেলওয়ে কর্তৃৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ১২ জুন থেকে ফের ট্রেনটি চালুর ঘোষণা দিয়েছে।

তবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তা বলছেন, কোরবানির ঈদকে ঘিরে স্পেশাল ট্রেনটি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঈদের পরে এটি যে কোন মুহুর্তে বন্ধ য়ে যেগত পারে। এটি যদি হয় তাহলে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন গড়ে তুলবো।আমরা চাই এই রুটে নিয়মিত ট্রেন চালু করা হোক।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

তিনি বলেন, ট্রেনটি চালু নিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চালকসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রস্তুত রয়েছে। এরপর লাভজনক এই ট্রেনটি কেন বন্ধ করা হচ্ছে তা তারা জানে না।

কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে টানা এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ানো হতে পারে।

যাত্রীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে পর্যটননগরী কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়ে অনেক কম। সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়া ট্রেনের যাত্রা বাসের চেয়েও আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের। ফলে বাসের চেয়ে ট্রেনকেই বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show
error: Content is protected !!