শনিবার- ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

চট্টগ্রামে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান

কিছু সাংবাদিক সংবাদ পরিবেশনে ঠিকাদারদের হয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন : রেলপথ উপদেষ্টা

কিছু সাংবাদিক সংবাদ পরিবেশনে ঠিকাদারদের হয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন : রেলপথ উপদেষ্টা

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, সাংবাদিকদের তথ্য পেতে সহায়তা করতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে রেল প্রশাসনকে। তবে দুঃখজনকভাবে কিছু সাংবাদিক সংবাদ পরিবেশনে ঠিকাদারদের হয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন—এটা কাম্য নয়। 

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবির সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, রেলকে রেল পরিচালনায় দক্ষ হতে হবে। রেল পরিচালনা, ইঞ্জিন মেরামত করা, বগি মেরামত করা এসব কাজে মনযোগ দিতে হবে। রাস্তা বানানো রেলের কাজ না, পানি সাপ্লাই দেয়া রেলের কাজ না। এসবের কারণে রেল অদক্ষ হয়ে যাচ্ছে। রেলের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই যার যে কাজ তাকেই সেটা করতে হবে। পানির ব্যবস্থা ওয়াসা করবে। রাস্তা যার আওতায় থাকবে সেই করবে।

রেল খাতকে লাভজনক ও টেকসই পরিবহনব্যবস্থায় রূপান্তর করতে হবে। বন্দরগুলোর সঙ্গে রেল সংযোগ আরও মজবুত করা গেলে দেশের অর্থনীতির গতি বাড়বে। আমরা চাই, জনগণ রেলকে নিজের বাহন মনে করুক-নিরাপদ, স্বস্তিদায়ক ও সময়নিষ্ঠ যাতায়াত নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার।

এ জন্য পাঁচটি বড় ধরনের সংস্কার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-পুরোনো রেলপথ সংস্কার, নতুন রুটে সংযোগ স্থাপন, আধুনিক যাত্রীসেবা চালু, ডিজিটাল টিকিটিং ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং নিরাপত্তা জোরদার করা।

ফাওজুল কবির বলেন, রেল খাতে এক টাকা আয় করতে খরচ হচ্ছে প্রায় আড়াই টাকা। এ ‘অপারেটিং রেশিও’ কমিয়ে আনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, এটি দুই টাকার নিচে নামিয়ে আনা।

তিনি জানান, নতুন করে ২৫০টি কোচ (বগি) রেলবহরে যুক্ত করা হচ্ছে। এর একটি অংশ দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নতুন কমিউটার ট্রেন চালু করা হবে। শিক্ষার্থীদের সময়মতো, নিরাপদে ক্যাম্পাসে যাতায়াত নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

উপদেষ্টা বলেন, সিলেট রুটেও নতুন ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে যাত্রীচাপ ও পর্যটনের গুরুত্ব বিবেচনায়।

এর আগে তিনি রেলওয়ের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। প্রথমেই তিনি যান রেলওয়ে ওয়ার্কশপে। সেখানে গিয়ে পরিদর্শন করে জানান, এই ওয়ার্কশপ রেলওয়ের স্ট্যান্ডার্ড না। বর্তমানে এই ওয়ার্কশপে রিপেয়ার ও মেইনটেইন্স করা হয়। আমরা এটাকে আরও উপরে নিয়ে যেতে চাই।

‘আমরা এগুলোকে রিপেয়ার, মেনটেইন্যান্স এবং এসেম্বেলিং ওয়ার্কশপে রুপান্তর করতে চাই। যাতে লোকোমোটিভের পার্টস এনে এখানে এসেম্বেল করা যায়। যার ফলে আমাদের খরচ কমবে এবং নতুন কর্মসংস্থান হবে। সেজন্য ডিপিপি প্রস্তুত করার জন্য বলা হয়েছে। সেটা হলে পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে কথা হয়েছে দ্রুতই হয়ে যাবে।’

রেলের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও মিউজিয়াম সংস্কারের বিষয়ে রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, ‘ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হবে। ঐতিহ্য নষ্ট করে রিপেয়ার বা সংস্কারের নামে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে টাইলস দিয়ে চকচকে করে দিলে হবে না। কাঠের স্থাপনা কাঠ দিয়েই রিপেয়ার করতে হবে। যেটা যেমন আছে সেটা সেভাবেই রিপেয়ার করে সংরক্ষণ করতে হবে।’

সিআরবিতে রেলের হাসপাতালকে আধুনিকায়নের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথাও জানান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page