
চট্টগ্রামে সরকারিভাবে ক্যান্সার রোগীর সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে শুধু চমেক হাসপাতালে। হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের বর্হিবিভাগে প্রতিদিন ক্যান্সার রোগী আসছেন ১৫০-২০০ জন। এ বিভাগে ইনডোর সিট রয়েছে ২৪টি।
এছাড়া গত বছর নতুন ও পুরাতন মিলে চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৯৬৫ জন ক্যান্সার রোগী। এরমধ্যে নতুন রোগী ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ জন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে রেডিওথেরাপি ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ হাজার ৬৩৩জন ক্যান্সার রোগী। এর মধ্যে নতুন রোগী ছিল ৪ হাজার ৭৭২ জন।
সংখ্যায় কম হলেও চিকিৎসা সুবিধার কারণে এ হাসপাতালে ক্যান্সার রোগী ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে ৬০ শয্যায় ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অথচ এই হাসপাতালে ১২০ শয্যায় ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসার সক্ষমতা রয়েছে।
চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি ওয়ার্ডে ভর্তি এক রোগীর স্বজনের ভাষ্য, সরকারি হলেও চমেক হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ে দেরি হয়। রোগ নির্ণয় যন্ত্রপাতি না থাকায় ঢাকা ও দেশের বাইরে দৌড়ঝাপ করতে হচ্ছে। এতে ব্যয় ও দুর্ভোগ বাড়ছে।
পক্ষান্তরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন বলেন, এই হাসপাতালে এখন খুব দ্রুত রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে। সিটি সিমুলেটর, লিনিয়ার এক্সিলারেটর মেশিনসহ অত্যাধুনিক নানা যন্ত্রপাতি রয়েছে এই হাসপাতালে। যদিও এই সুবিধার কথা এখনও অজানা অনেকেরই।
হাসপাতালের অনকোলজি ও রেডিওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শেফাতুজ্জাহান বলেন, মাত্র তিন বছর আঘে এই হাসপাতালে স্বল্প পরিসরে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়। যা এখন ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে পরিণত হয়েছে।
চট্টগ্রামের মানুষের সহযোগীতায় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ঐকান্তিক চেষ্টায় এই হাসপাতালে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে সর্বাধুনিক লিনিয়ার এক্সিলারেটর মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এই মেশিনের কারণে হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসা অনেকটা এগিয়ে গেছে। আর এটা শুধু হাসপাতাল নয়, মেডিকেল কলেজও। এখানে রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমও।
তিনি বলেন, ক্যান্সার রোগ জঠিল, তবে দুরারোগ্য নয়। প্রাথমিক অবস্থায় সুচিকিৎসা পেলে এই রোগ জয় করা সম্ভব। এছাড়া এই রোগ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় ভেজাল খাবার গ্রহণে সচেতন হওয়া। এ বিষয়ে সরকারেরও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
তিনি আরও বলেন, ভেজাল খাবারের কারণে বাংলাদেশ এখন ক্যান্সার রোগীর কারখানা হয়ে গেছে। এই সুযোগে প্রতিবেশী দেশ ভারত ক্যান্সার চিকিৎসার কারখানা বানিয়ে ফেলেছে। আমরা এই দুই কারখানা রিমোভ করতে চাই। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ ভেজাল খাবার গ্রহণে সচেতনতার উপর কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে। আবার ভারতের চিকিৎসা কারখানা ভাঙতে গরিব ক্যান্সার আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিনামুল্যে ওষুধ প্রদান করছে। এ কারণে ক্যান্সার রোগীদের ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ।