শনিবার- ২২ মার্চ, ২০২৫

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য

খেলাপি ঋণে শ্রীলঙ্কার পরেই বাংলাদেশ

print news

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের হারে শীর্ষে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির খেলাপি ঋণ প্রায় ১১ শতাংশ। এরপরই অবস্থান বাংলাদেশের, খেলাপি ঋণ প্রায় ৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণের দেশ নেপাল। দেশটির খেলাপি ঋণ ২ শতাংশের কম। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ বাড়ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক আপডেট প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চ আমদানি ব্যয়, ঋণগ্রহীতাদের নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বল তদারকি ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সেই হিসাবে এক বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ১৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেড়েছে।

এটা অবশ্য শুধু খেলাপি ঋণের হিসাব। পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে খেলাপি দেখানো যাচ্ছে না এমন ঋণ ও বিশেষ নির্দেশিত হিসাবের ঋণকে খেলাপি হিসাবে দেখানোর পক্ষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

আইএমএফের হিসাব অনুসরণ করলে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা। গত জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে। এই ঋণ দিতে আইএমএফ শর্ত দিয়েছিল, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার কমাতে হবে, যাতে দেশের ব্যাংক খাত বড় ধরনের কোনো ঝুঁকিতে না পড়ে। সংস্কারের এই উদ্যোগ নেওয়ার মধ্যেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ যাতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে না যায়, সে জন্য গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশেষ ছাড় দেয়। শিথিল করে ঋণ খেলাপি হওয়ার নীতিমালা।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশ, মালদ্বীপের ৬ শতাংশের কম, পাকিস্তান ও ভুটানের ৮ শতাংশের কম।

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের আমানত ও ঋণ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি আগের প্রান্তিকের মতোই ছিল। তবে এই সময়ের প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। ব্যাংকঋণের সুদের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯ শতাংশ সুদের সীমা ও কম সুদের বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়ন তহবিলের কারণে ব্যাংকঋণ বাড়ছে। অপর দিকে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ও আগের প্রান্তিকের চেয়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বাংলাদেশের মতো ভুটানের অবস্থাও একই ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও পাকিস্তানের আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেশি ছিল। আর নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কম ছিল। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো টাকা দিয়ে ডলার কিনেছে। এর ফলে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা কমে গেছে ব্যাংকগুলোর।

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page