
ঘুষের আখড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এর মধ্যে মোটেও ব্যতিক্রম নন এই সেবা সংস্থার হিসাবরক্ষক মাসৃুদুল ইসলাম। অন্য সবার মতো তিনিও ঘুষ ছাড়া ছাড়েন না কোন চেক।
নিজ অফিসেই বসে চেক ডেলিভারি দেওয়ার সময় তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ঘুষ নেন। সম্প্রতি এমন কিছু ছবি ও ভিডিও এসেছে দৈনিক ঈশানের বার্তা বিভাগে। তবে তিনি এই ঘুষ গ্রহণের নাম দিয়েছেন ‘বকশিস’।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, চসিকের হিসাব বিভাগে মাসুদুলের ঘুষ গ্রহণের দৃশ্য নিয়মিত চোখে পড়ে। বিশেষ করে ঠিকাদারদের চেক ডেলিভারির সময় চেকের অর্থের পরিমাণ হিসাব করেই ‘ঘুষ’ নেন মাসুদুল ইসলাম। চেক নিতে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা অথবা চেকের অর্থের ২%-৫% পর্যন্ত নগদ দিতে হয় তাকে। আর চাহিদা মতো না হলে দিয়ে বসেন গালিও!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী ঠিকাদার বলেন, হিসাব রক্ষক মাসুদুল ইসলামের কাজ হলো শুধু ঠিকাদারদের চেক ডেলিভারি দেওয়া। তবে তিনি ডেলিভারি দেওয়ার সময় বকশিসের নাম করে প্রতিদিনই সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের ঘুষ নেন।
তিনি বলেন, ইস্যুকৃত চেক ডেলিভারির সময় ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ঘুষ নেন মাসুদুল। চেকের অর্থ ছোট হলে সর্বনিম্ম ১০০০ এক হাজার টাকা নেন। আবার চেকের অর্থের পরিমাণ বড় হলে ৫০০০ থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।’ আবার কোন কোন চেক থেকে ২% থেকে ৫% পর্যন্ত হিসাব করে ঘুষ নেন।
সম্প্রতি দৈনিক ঈশানের বার্তা বিভাগে আসা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ঠিকাদারদের চেক দেওয়ার সময় প্রকাশ্যে ঘুষ নেন হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলাম। ঘুষের টাকা তিনি পকেটে ভরতেও দেখা যায়। চেকের পরিমাণ অনুযায়ী ঘুষের টাকা মন মতো না হওয়ায় একজন ঠিকাদারকে গালিও দিয়ে বসেন হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলাম।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলামের ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। প্রতিবারই তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মেসেজ অপশনে মেসেজ পাঠালেও তিনি কোন রকম সাড়া দেননি।
তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মাসুদুল ইসলামের ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও আমিও পেয়েছি। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। চেক ডেলিভারি দিয়ে বকশিসের নামে ঘুষ নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।