Skip to content

সোমবার- ১৬ জুন, ২০২৫

চট্টগ্রামের কোরবানির হাটে ভারত থেকে এলো মরুভূমির উট

চট্টগ্রামের কোরবানির হাটে মরুভূমির উট, দাম চড়া

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক কোরবানির পশুর হাট মাতাচ্ছে মরুভুমির তিনটি উট। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ভারতের রাজস্থানের ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে আনা হয়েছে মরুভূমির জাহাজ খ্যাত প্রাণীগুলো।

১২ থেকে ১৫ মণ ওজনের উটগুলোর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। তবে ক্রেতারা দেখতে ভিড় করলেও কেনার জন্য দরদাম করছেন না। বেশিরভাগই সেলফি, ভিডিও কিংবা ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন বলে জানান ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্মের প্রতিনিধি গাজী সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে ট্রাকে করে বৃহ¯পতিবার (২৯ মে) উটগুলো চট্টগ্রামের মইজ্জারটেক পশুর হাটে আনা হয়। এরপর থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা সেখানে ভিড় করছেন। ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন, শিশুরা উটের চারপাশ ঘিরে হৈ-চৈ করছে।

তিনি জানান, দুই বছর আগে ঢাকার একটি হাট থেকে উটগুলো কেনা হয়। এরপর এগুলো ফার্মে লালনপালন করা হয়। উটগুলো বিক্রির জন্য চট্টগ্রামের শৌখিন ক্রেতাদের টার্গেট করা হয়েছে। এ জন্যই মূলত উটগুলো চট্টগ্রামের কোরবানির হাটে আনা হয়েছে।

উট বিক্রেতা মো. মন্টু হোসেন জানান, আমরা ২৬টি গরু ও ৬টি মহিষও এনেছি। সাথে তিনটি উট বেনাপোল হয়ে এসেছে, মূল উৎস ভারতের রাজস্থান এলাকা। দাম চাচ্ছি ৩৫ লাখ পর্যন্ত। তবে এখনও পর্যন্ত দেখা বেশি, ক্রেতা কম।

এনামুল হক নামে হাটে আসা একজন ক্রেতা বলেন, প্রতিবার কোরবানির জন্য গরু বা ছাগল কিনি। এবার শুনলাম হাটে উট এসেছে, তাই দেখতে এলাম। দাম বেশি। আমার পক্ষে কেনা সম্ভব না। তবে যারা শৌখিন এবং ধনাঢ্য, তাদের জন্য ভালো অপশন হতে পারে।

চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদ হাসান বলেন, আমি ছবি তুলতেই এসেছি। উট তো সাধারণত চট্টগ্রামে দেখা যায় না। এত কাছ থেকে উট দেখা আর সেলফি তোলা-এটা বেশ মজার মনে হয়েছে। তবে আমার মনে হয়, দামটা একটু বেশি। অনেকে আসলে দেখতেই আসে, কেনার মতো প্রস্তুতি খুব কম মানুষেরই থাকে।

মইজ্জারটেক হাটের ইজারাদার জসিম উদ্দিন জুয়েল বলেন, চট্টগ্রামের অন্যতম বড় হাট এটি। প্রতিবছর এখান থেকে বিপুল পরিমাণ পশু বেচা-কেনা হয়। এবার কোরবানির পশুর পাশাপাশি উট আসায় হাটের আকর্ষণ বেড়েছে।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরীফ জানান, চট্টগ্রামের কোন হাট এখনো জমেনি। সে তুলনায় মইজ্জারটেক হাটে ক্রেতার আনাগোনা বেড়েছে। হাটে লেনদেন নিরাপদ রাখতে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর ও পূর্ব আফৃকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য এশিয়ার কিছু অংশে উট পালন একটি পুরোনো ঐতিহ্য। এই প্রাণীটি শুষ্ক পরিবেশে টিকে থাকার জন্য বিশেষভাবে সক্ষম। শুধু বাহ্যিক আকর্ষণ নয়, উটের মাংসও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, কম ফ্যাট ও কোলেস্টেরল রয়েছে। আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ এই মাংস অনেক দেশের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

ধর্মপ্রাণ আলেমদের মতে, ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে উটের কদর মুসলিম সমাজে বরাবরই রয়েছে। নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর স্মৃতিবাহী এই প্রাণী কোরবানির সময় এক ভিন্ন আবেগ ছড়িয়ে দেয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে। তাই ঈদের আগে মইজ্জ্যারটেকে এই উটগুলো যেন কোরবানির হাটের এক নতুন প্রাণশক্তি এনে দিয়েছে।

ঈশান/মখ/মসু

আরও পড়ুন

No more posts to show

জনপ্রিয়

You cannot copy content of this page