চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী ত্যাগী মরহুম নেতাদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে ক্ষুব্ধ দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম আকবর খন্দকার। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
শনিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট নিজের গ্রামের বাড়িতে আত্নগোপনে ছিলেন- এমন খবর ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে।
কিন্তু শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নিয়াজ মোর্শেদ এলিটকে উদ্ধার করতে ওই বাড়িতে যান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির গোলাম আকবর খন্দকার। এ খবর শুনে বিএনপির ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। ফলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তিনি সেখানে অবরুদ্ধ ছিলেন। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার শনিবার মিরসরাইয়ে যান দলের দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী ত্যাগী মরহুম নেতাদের কবর জিয়ারত করতে। বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম ইউসুফের বাড়ি যান তিনি।
এ খবরে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা দলে দলে জড়ো হয়ে বাড়িটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। একই সঙ্গে বাড়ির পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে কেন্দ্রীয় বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক স¤পাদক মাহবুবুল আলম শামীমের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান। এসময় নেতাকর্মীদের শান্ত করে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় অবরুদ্ধ বিএনপি নেতাকে বের করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বাবা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম ইউসুফের বাড়ি গিয়ে দলের নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন বিএনপির শীর্ষ নেতা গোলাম আকবর খন্দকার।
গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, মনিরুল ইসলাম ইউসুপ কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মিরসরাই উপজেলা বিএপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। শনিবার তিনি আমাকে চায়ের দাওয়াত দিলে আমি দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ইউসুপ সাহেবের বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দলের কিছু নেতাকর্মীর মুখে শুনি তার ছেলে নিয়াজ মোর্শেদ এলিট যুবলীগ নেতা। তিনি নিজ বাড়িতে আত্নগোপনে আছেন। এমন অভিযোগ কেউ আমাকে আগে দেই নাই। বিষয়টি জানলে আমি ওই বাড়িতে যেতাম না।
উল্লেখ্য, মিরসরাই উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন দুটি আলাদা গ্রুপে পরিচালিত হয়। একটির নেতৃত্বে আছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন। অপরটির নেতৃত্বে আছেন আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান। যিনি সর্বশেষ ২০১৮ সালে মিরসরাই আসন থেকে বিএনপির হয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। এই নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারি নেতাকর্মীরাই বিএনপি নেতা গোলাম আকবর খন্দকারকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটায়।