
জামিন না দেওয়ায় চট্টগ্রামে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরকে জুতা ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটিয়েছে এক আসামি। তার বিরুদ্ধে ওই আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম কোর্ট হিলস্থ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ভবন ৪র্থ তলায় অবস্থিত সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের এজলাসের ভিতর এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আসামির নাম মো. মনির খান মাইকেল। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানাধীন গোকন এলাকার খাঁ বাড়ির গোলাপ খাঁর ছেলে। মামলার অভিযোগ সূত্রে কা.বি. ১৬১ ধারায় মামলার সাক্ষ্যের জবানবন্দি অনুযায়ী আসামি মনির খান মাইকেল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সমর্থক।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এড. মেজবাহ উদ্দিন মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘড়ি কাটায় তখন ঠিক দুপুর ১২টা। শুরু হতে যাচ্ছিল চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের নিয়মিত কার্যক্রম। উপস্থিত বাদী বিবাদী উকিল কোর্ট সংশ্লিষ্ট স্টাফরা।
এ সময় হাজির করা হয়েছিল কারাগারে থাকা আসামিদেরকেও। তখন বিচারকের চেয়ারে হাজির বিচারকও। হঠাৎ আদালতের লকআপ থেকে বিচারক মোহম্মদ জহিরুল কবিরকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ শুরু করে এক আসামি।
বলে- আমাকে জামিন দিচ্ছস না কেন? এমন বলে বিচারককে লক্ষ্য করে জুতা ছুঁড়ে মারে ওই আসামি। তিনি উক্ত আদালতের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি ছিলেন। এ ঘটনায় ওই আসামির বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
আদালত সূত্র জানায়, আদালতে জামিন শুনানির সময় বিচারকার্য শুরু হলে কিছু বুঝে উঠার আগেই চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি জুতা নিক্ষেপ করেন মনির খান মাইকেল।
তাকে দ্রুত নিবৃত্ত করেন পুলিশ। শুনানির জন্য এই আসামিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছিল। পরে তাকে আবার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও তার মা-বাবা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে ফেসবুকের দুটি লাইভে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন মনির খান মাইকেল।
এই ঘটনায় ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানায় মনির খান মাইকেলের (৩২) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সহকারী পরিদর্শক (এসআই) তপু সাহা। পরদিন ২৩ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই মামলায় মনির খান মাইকেলের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ জুন অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরপর থেকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
ঈশান/খম/মউ