
গুদামে প্রবেশে দরজার তালা অক্ষত, প্যাকেটও আছে। নেই শুধু প্যাকেট মোড়ানো ক্যাবল, নাট, স্প্রিংসহ নানা রকমের মূল্যবান সরঞ্জাম। এমন ঘটনা ঘটেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রামের পাহাড়তলী প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের গুদামে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকালে গুদাম থেকে সরঞ্জাম বের করতে গিয়ে ধরা পড়ে বিষয়টি। যা দেখে তাজ্জব বনে যান দপ্তরের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে।
গুদাম থেকে মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও হওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে নিশ্চিত করেছে জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের পরিদর্শন নিয়ন্ত্রক গোলাম মোর্শেদ।
তিনি বলেন, গুদাম থেকে সরঞ্জাম চুরির বিষয়টি পরিকল্পিত। মিলেছে চুরির আলামতও। প্রাথমিকভাবে তিন জনকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এরপরও ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবেন।
সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্যমতে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের গুদামে রেলের জন্য ক্রয়করা এ, বি, সি ওয়ার্ডের সব ধরণের সরঞ্জাম রাখা হয়। এর মধ্যে স্প্রিং, নাট, ক্যাবল থেকে শুরু করে বিদেশি দামি মালামালও রয়েছে।
কিন্তু সোমবার বিকেলে বি ওয়ার্ডের দায়িত্বরত কর্মচারীরা গুদাম থেকে সরঞ্জাম বের করতে গিয়ে দেখেন, অনেকগুলো প্যাকেটের ভেতর থেকে সরঞ্জাম উধাও হয়ে গেছে। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন ককর্মকর্তাদের জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, গুদামে প্রবেশে দরজার তালা অক্ষত, প্যাকেটও সব ঠিকঠাক, কিন্তু প্যাকেটের ভেতরে নেই অনেক সরঞ্জাম। ক্যাবল, নাট স্প্রিংসহ রেলের প্রায় অনেক টাকার সরঞ্জাম চুরি হয়ে গেছে। যা নির্ধারণ করতে সময় লাগবে। এ জন্য রেজিষ্টার মেনটেইনের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, সরঞ্জাম চুরির আলামত আছে। গুদামের ছাদের উপরের টিন খোলা। তাছাড়া এর আগে গুদামে স্থাপন করা তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরার একটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন। দুটির মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ কাজের সময় তিনজনকে দেখা গেছে। যদিও তখন চুরির বিষয়টি আঁচ করতে পারেনি কেউ।
এ বিষয়ে জানতে পাহাড়তলীর প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মো. বেলাল হোসেন সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে তিনি আরেক গণমাধ্যমকর্মীকে বলেন, ‘চুরির ঘটনায় দপ্তরের ইনেসপেকশন বিভাগের এসিওএস মো. আলমগীরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। কমিটি পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিবেন। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দায়িত্বে গাফেলতি ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভাষ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলীয় প্রভাবে বদলির হিড়িক পড়ে। এরপর প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর একাধিক দপ্তরের দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হয়। এতে স্বাভাবিক কাজ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।