বুধবার- ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

চট্টগ্রামে শিবিরের দু‘গ্রুপে দ্বন্ধ, গুলিতে নিহত ছাত্রলীগকর্মী

চট্টগ্রামে শিবিরের দু‘গ্রুপে দ্বন্ধ, গুলিতে নিহত ছাত্রলীগকর্মী

ট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও থানার শমসেরপাড়া এলাকায় শিবিরের দু’গ্রুপের দ্বন্ধের জেরে গুলিতে আফতাব উদ্দিন তাহসীন (২৭) নামে এক ছাত্রলীগকর্মী নিহত হয়েছেন।

সোমবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ ঘটনা পর সন্ধ্যার দিকে পুলিশ চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশ থেকে তাহসীনের লাশ উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন। তিনি বলেন, গুলির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাহসীনের লাশ উদ্ধার করি। নিহত তাহসীন চান্দগাঁও থানার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীরপুল এলাকার দিলা মিস্ত্রি বাড়ির মো. মুসার ছেলে। সে চট্টগ্রাম মহানগরের ওমরগণি এম ই এস কলেজে ছাত্রলীগ করতেন।

সিএমপির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, শমসেরপাড়া এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সারোয়ার ওরফে বাবলা ও সাজ্জাদ গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত তাহসীন ছাত্রলীগ করলেও ইট, বালু ও সিমেন্টের ব্যবসার কারণে শিবির নেতা সারোয়ার ওরফে বাবলার সাথে থাকতেন।

তাহসীনের ভাই তানভীর বলছেন, শিবিরকর্মী সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখি করতেন তাহসীন। ইট ও বালুর ব্যবসা থেকে তাহসীনের কাছে চাঁদাও চান সাজ্জাদ। এ কারণে তাহসীন আদালতে জিডিও করেন দুই মাস আগে। এ কারণে তাহসীনকে গুলি করে হত্যা করেছে সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে তাহসীন সোমবার বিকেলে চা পান করছিলেন। ওই সময় চার যুবক একটি কালো মাইক্রোবাস থেকে নেমে ফিল্মি স্টাইলে তাহসীনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। তাহসীন এ সময় প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তারা কর্ণপাত করেনি। এরপরই ওই যুবকরা মাইক্রোবাসে উঠে চলে যায়।

স্থানীয়রা জানান, নিহত তাহসীন চট্টগ্রাম মহানগরের ওমরগণি এমইএস কলেজের ছাত্র ছিলেন। ওই কলেজের রাজনীতিতে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য আরশাদুল আলম বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। তাহসীন ওই এলাকায় ইট, বালু ও সিমেন্টের ব্যবসা করতেন। তার এই ব্যবসায় সহযোগী ছিলেন সারোয়ার।

এদিকে চট্টগ্রামের এক সময়ের মূর্তিমান আতঙ্ক, পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং শিবিরক্যাডার হিসেবে পরিচিত, আলোচিত এইট মার্ডার মামলার মৃত্যুণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ আলী খান। বর্তমানে বিদেশে পলাতক এই সাজ্জাদের সহযোগী হিসেবে অপরাধজগতে পদার্পণ করেন বায়েজিদ বোস্তামী থানা-সংলগ্ন হাটহাজারীর শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। সবশেষ ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

আর সারোয়ার ওরফে বাবলা ভারতে পলাতক সেই সাজ্জাদ আলী খানের হয়েই একসময় কাজ করতেন। তিনি নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার খোন্দকারপাড়ার কালা মুন্সির বাড়ির আব্দুল কাদেরের ছেলে। সারোয়ারের বিরুদ্ধে নগরের ডবলমুরিং, পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ বোস্তামি থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট ১৮টি মামলা রয়েছে। সবগুলোতে জামিনে রয়েছেন তিনি।

এদিকে সাজ্জাদ-সরোয়ারকে শিবিরকর্মী বলায় ক্ষেপেছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর জেলা ছাত্রশিবির। সংগঠনটির দাবি, চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডার মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ আলী খান এবং তার একসময়ের সহযোগী সারোয়ার কখনও ‘শিবিরকর্মী’ ছিলেন না।

সোমবার (২১ অক্টোবর) গভীর রাতে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক সালাউদ্দিন আকাশের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি তানজীর হোসাইন জুয়েলের বরাতে এই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।

ঈশান/খম/বেবি

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page