মঙ্গলবার- ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম

চাইলেন ১৫ বছরের আয়ের হিসাবও

চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি এ কে ফজলুল্লাহকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম
print news

ট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহকে অবরুদ্ধ করে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন। এসময় এমডিকে প্রায় এক ঘণ্টা তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ রেখে বিগত ১৫ বছরের আয়ের হিসাব চান তারা।

রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রায় এক ঘন্টা এমডিকে অবরুদ্ধ রাখেন। তাদের অভিযোগ, অনিয়ম করার পরও এ কে এম ফজলুল্লাহ এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান হিসাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তিনি। এরপর ২০১১ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবে খাটিয়ে এমডি পদ দখল করে আছেন। ওয়াসার প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা ভাগ-বাটোয়ারা ও বিদেশে পাচার করেছেন এই এমডি।

সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে উপস্থিত ছিলেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির নেতারা। মহানগর কমিটির সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু জানান, রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে এমডির কার্যালয়ে অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজের নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা বিক্ষোভ করেন। এরপর তারা ১৭টি দাবি তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে গুদাম থেকে রেলের মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও!

দাবিগুলো হলো- এমডি ফজলুল্লাহর আয়কর বিবরণী ২০০৯-২০২৪ এবং স¤পদ বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ, ভ্রমণ বিল (২০০৯-২০২৪) এর পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ এবং ভ্রমণ বিলকে ব্যবসায় পরিণত করায় অনতিবলম্বে তা সরকারি কোষাগারে জমা করা, অবিলম্বে স্বৈরচারী সরকারের পোষ্যদের নিয়ে গঠিত বোর্ড বাতিল, চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রকৌশল ও রাজস্ব শাখাকে ঢেলে সাজানো, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ৪ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষ নিয়ে তান্ডবে অংশ নেওয়া ওয়াসার কর্মচারীদের চিহ্নিত করে স্থায়ী বহিষ্কার করা।

সরকার পতনের পর এমডির দেওয়া সকল অবৈধ অফিস আদেশ বাতিল, ফজলুল্লাহর সময়ে বহিষ্কৃত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা, যে সকল কর্মকর্তা প্রাধিকারের বাইরে গাড়ি ও জ্বালানি ভোগ করছেন তা সরকারি কোষাগারে জমা করা, যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী অধিক ৫ বছর একই কর্মস্থলে কর্মরত তাদের দ্রুত বদলি করা, বিগত সরকারের আমলে সমাপ্ত ও চলমান প্রকল্পের নথি-অডিট সংক্রান্ত তথ্য ও সমস্ত ক্রয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা, চট্টগ্রাম ওয়াসা রেস্ট হাউজের বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাসের বিল (২০০৯-২০২৪) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিজ খাত থেকে পরিশোধ করতে হবে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে গুদাম থেকে রেলের মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও!

ব্যারিস্টার কলেজ এলাকায় অবৈধ সংযোগের তদন্ত-ওয়াটার ওয়ার্কসে ভাউচারে পানি বিক্রয়ের টাকা আত্নসাতের তদন্ত প্রতিবেদন সহ ২০০৯ এর পর সংগঠিত অন্যান্য দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রকল্প, রাজস্ব ও রাজস্ব শাখার দুর্নীতি প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে মনিটরিং সেল চালু করতে হবে। বিক্রয় বিভাগে ১৫ বছর ধরে কর্মরত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রিচার্ড নেলসন পিনারুর অনিয়ম তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। উইংস লিমিটেড নামের ঠিকাদার থেকে স্মার্ট মিটার কিনে পদ্মা নামে বিল করার রহস্য ও অনিয়ম তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বিগত ১০ বছর ধরে ৩০-৩৫ শতাংশ পানি সিস্টেম লস দেখিয়ে বিপুল অর্থ আত্নসাতের সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি দিতে হবে। বিগত ১৫ বছরে করোনাসহ নানা সংকটের মধ্যে পানির দাম বাড়িয়ে মানুষের কষ্টের প্রতিকার করতে হবে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে গুদাম থেকে রেলের মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও!

পদত্যাগের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, কয়েকজন এসে আমার রুমে আন্দোলন করেছে। তারা আমার পদত্যাগ দাবি করেছে। আমাকে সরকার এ পদে বসিয়েছে। সরকার যেদিন আমাকে বলবেন-আমি তখনই পদত্যাগ করবো। আমি যদি আজকে পদত্যাগ করি, কাল যদি আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, তার দায়ভার কে নিবে?

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show