চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জলহস্তির পর এবার আসছে জিরাফ। আসছে আরো আমেরিকান ফ্লেমিঙ্গো পাখি। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানান।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আরও দু‘ ধরণের প্রাণী আনা হবে। এর মধ্যে তিনটি জিরাফ ও পাঁচটি আমেরিকান ফ্লেমিঙ্গো পাখি রয়েছে। ইতোমধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার করা হয়েছে। জিরাফগুলো তানজেনিয়া থেকে আসবে। মাস খানেকের মধ্যেই সেগুলোর ডেলিভারি পেয়ে যাব।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে দুটি জলহস্তি পেয়েছি। এর মধ্যে একটি নিয়ে আসা হয়েছে। আরেকটি এক সপ্তাহ পর আসবে। যেটা আনা হয়েছে তার নাম লাল পাহাড়। এটি জনসাধারণের জন্য আমরা উন্মুক্ত করেছি। অবশ্যই তার বিনিময়ে আমরা রংপুর চিড়িয়াখানায়া দুটি বাঘ দিয়েছি।
তিনি বলেন, চিড়িয়াখানায় এখন নতুন করে আমাদের কুমিরের খাঁচা তৈরি করা হয়েছে। আগে যে কুমিরের খাঁচা ছিল সেখানে বাইরে থেকে বুঝা যেত না। আগের কুমিরের খাচায় জলহস্তি রাখা হয়েছে। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমরা তিনটি সিংহও এনেছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ১০ একর জমির উপর অবস্থিত। পাশেই কিছু খাসজমি ছিল। সেই জমি অনেকদিন অবৈধ দখলদারদের হাতে ছিল। জায়গাটি দখলমুক্ত করে বাউন্ডারি দেয়াল করছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে ওই দখলমুক্ত জায়গাটিকে আমরা বার্ডসপার্ক করব। বিভিন্ন ধরনের পাখি যদি আমরা রাখতে পারি জনসাধারণ সেগুলো দেখতে পারবেন। এ ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজম্ম বিভিন্ন ধরণের প্রাণী স¤পর্কে জানতে পারবে, শিখতে পারবে।
চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, মৎস্য ও প্রাণীস¤পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে দুটি বাঘের বিনিময়ে ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে আমরা এক জোড়া জলহস্তি পাচ্ছি। এর মধ্যে একটি পুরুষ জলহস্তি আমরা পেয়েছি। তার ওজন প্রায় ১ হাজার ২০০ কেজি ও বয়স ১২ বছর। ২০১১ সালের তার জন্ম। জলহস্তিরা মূলত সবজি ও ফলমূল খায়।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালের শেষদিকে মন্ত্রণালয়ের কাছে জলহস্তি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রহমান। এ প্রক্রিয়া অগ্রসর না হওয়ায় ২০২২ সালের ২২ আগস্ট ফের চিঠি দেওয়া হয়।
ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় বিনিময় হিসেবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে রংপুরের জন্য এক জোড়া বাঘ এবং ঢাকার জন্য এক জোড়া সাম্বার হরিণ ও এক জোড়া ইন্দোনেশিয়ান আয়াম সিয়ামি মোরগ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। পাশাপাশি রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ পাঠানো এবং জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে জলহস্তি চট্টগ্রামে আনার যাবতীয় ব্যয়ভার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কাছে বহন করার শর্ত দেওয়া হয়।
গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রংপুরে বাঘ পাঠানো এবং ঢাকা থেকে জলহস্তি আনার ব্যয়ভার বহন করার শর্ত মেনে নিয়ে চিঠি দেয়। অন্য প্রাণীগুলো চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত না থাকায় সেগুলো প্রজনন সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় ওই চিঠিতে। এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জলহস্তি দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায় মন্ত্রণালয়।
এরপর গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে দুই বছর বয়সি এক জোড়া বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় পৌঁছে দেওয়া হয়। বিনিময়ে বৃহ¯পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা থেকে ১২ বছর বয়সি একটি পুরুষ জলহস্তি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়।