মঙ্গলবার- ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

দুই কোটি ৯০ লাখ টাকা বিল বকেয়া

চট্টগ্রাম মেডিকেল ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

চট্টগ্রাম মেডিকেল ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
print news

দুই কোটি ৯০ লাখ টাকা বিল বকেয়ার দায়ে একদিনেই কাটা পড়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ।

সোমবার (২৪ জুন) সকালে সরকারি দুই সেবা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সরকারি আরেক সেবা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। তবে বিকেল ৩টার দিকে পুনরায় দুই প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।

এর আগে, তাদের কয়েকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবুও উনারা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি। আমরা শুধু একাডেমিক ভবনের বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। ছাত্রাবাসে বিদ্যুৎ আছে। তবে তাদের যোগাযোগের পর বিকেল সাড়ে ৩টায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে।

একইভাবে এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সোমবার সকাল ১০টার দিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়। তাদেরও আমরা বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। তারা তবুও বকেয়া বিল পরিশোধ করেনি। সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর তাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। পরে বিকেল ৩টার দিকে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

চট্টগ্রাম মেডিকেলের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, আমাদের কিছু বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল, যার কারণে বিদ্যুৎ অফিস লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়েও আমরা চিঠি দিয়েছি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার সময় চট্টগ্রাম মেডিকেলের প্রায়ই ক্লাস রুম ফাঁকা ছিল। নিচ তলায় প্যাথলজি ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল। শিক্ষার্থী না থাকায় অনেক শিক্ষককে ক্লাসরুমে একা বসে থাকতে দেখা গেছে।

চমেকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ রহমান বলেন, আমাদের ল্যাবের কাজ ছিল সকাল থেকে। বিদ্যুৎ না থাকায় সব কাজ বন্ধ ছিল। কয়েকটা ক্লাস হলেও অতিরিক্ত গরমে সেগুলোও বন্ধ রাখা হয় বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মুনতাসির হক বলেন, সকালে ক্লাস করতে এসেছিলাম। এসে দেখি বিদ্যুৎ নেই। অনেকেই চলে গেছে। আমাদের একটি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সে জন্য আমরা কয়েকজন অপেক্ষা করছিলাম। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাটাও হয়নি।

একইভাবে বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে মোমবাতি ও মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অতিরিক্ত গরমে ঘেমে যাওয়ায় কেউ কেউ রুমাল দিয়ে বারবার মুখের ঘাম মুচেছেন।

রেলওয়ে কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. নুরুন্নবী বলেন, সকালে আসার পর একটু বিদ্যুৎ ছিল। এরপর বিদ্যুৎ চলে যায়। অনেকক্ষণ বিদ্যুৎ না আসার পর শুনি বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় লাইন কেটে দিয়েছে। এরপর আমরা সবাই অন্ধকারে কাজ করেছি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ যে কাজটি করছে সেটা ঠিক না। টাকা দেবে সরকার। সরকার আমাদের বাজেট দিলেই তো আমরা বকেয়া বিল দিতে পারব। তাই বলে পুরো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে সেটা হতে পারে না। সেই সকাল ১০টায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ৯ বসতঘর, দু‘জনের প্রাণহানী

তিনি বলেন, শুনেছি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজেও বিদ্যুৎ কেটে দিয়েছে। এটা তো সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। ওরাও সরকারি প্রতিষ্ঠান। এসব ঠিক না। এর আগেও অনেকবার এরকম করেছে। কন্ট্রোল অফিসেও বিদ্যুৎ নেই। কোনো ট্রেনের যদি দুর্ঘটনা ঘটে এর দায়ভার কি পিডিবি নেবে?

চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিভাগের (দক্ষিণ) প্রধান প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিভাগের এক কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সোমবার সকাল ৯টায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

ঈশান/খম/সুপ

আরও পড়ুন

No more posts to show
error: Content is protected !!