
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে গায়েব হয়ে গেছে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীর দুটি মার্কশিট। তবে মার্কশিটগুলো কোন পরীক্ষার্থীর তা জানা যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তদন্তে ফলাফল জালিয়াতির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আগেভাগে এ ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ জুন মাউশি গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
মার্কশিট গায়েবের ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ জুন) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। নগরীর পাঁচলাইশ থানায় এই জিডি করেন বোর্ডের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ দিদারুল আলম।
জিডিতে ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘আমার অফিস কক্ষে তিনটি লকারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা-২০২৩ এর শিক্ষার্থীদের লক্ষাধিক নম্বরফর্দ রক্ষিত ছিল। গত ১৯ মে সকাল ১০টার দিকে দেখা যায় যে, ওই তিনটি লকারের মধ্যে একটি লকারে লাগানো তালা নেই।
বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান মহোদয়কে লিখিতভাবে অবহিত করি। পরবর্তীতে ৩ জুন বিকেল তিনটার সময় লকারটি তদন্ত কমিটির নির্দেশক্রমে শিক্ষাবোর্ডের দু‘জন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, লকারে শুধুমাত্র দু‘জন শিক্ষার্থীর দুটি নম্বরফর্দ নেই। তবে এই নম্বরফর্দ দুটি কোন দু‘জন শিক্ষার্থীর তা জিডিতে উল্লেখ নেই।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। কেবল বাংলা ছাড়া তিনি সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পায়। কিন্তু চতুর্থ বিষয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ায় সামগ্রিক ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। বাংলায় জিপিএ-৫ না পাওয়ায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে যায়।
আবেদন করতে গিয়ে দেখে কে বা কারা আগে থেকে সব বিষয়ের জন্য আবেদন করে রেখেছেন। এ ঘটনায় ছেলের পক্ষে তার মা বনশ্রী নাথ পাঁচলাইশ থানায় গত ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে জিডি করেন। সেই জিডিতে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন, তা বের করার আবেদন জানানো হয়।
চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত অনিয়মসহ নানা অভিযোগ তদন্তে উল্লিখিত কমিটি করা হয়। কমিটি হওয়ার পর অনিয়মের আলামতগুলো সরিয়ে ফেলতে সহায়তার জন্য এলপিআরে থাকা সাবেক সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদকে গত ১৫ এপ্রিল থেকে দৈনিক ২ হাজার টাকা মজুরিতে আবার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে ফলাফল কেলেঙ্কারিতে কিবরিয়া মাসুদের শাস্তি হয়।
অডিও ফাঁস ও কিবরিয়া মাসুদকে দায়িত্ব আনার বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ইদ্রিস আলী জানান, জালিয়াতির আলামত নষ্ট করার উদ্দেশ্যে কিবরিয়া মাসুদকে আবার ফলাফল প্রস্তুতের মতো স্পর্শকাতর শাখায় আনা হয়েছে। অডিও ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি দিনের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে।
তবে অডিও ফাঁসের বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুজিবুর রহমান ও প্রোগ্রামার আবদুল মালেকের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, উল্লিখিত ধরনের অডিওটি আবদুর রহমানের কাছ থেকে জোর করে চাপ দিয়ে নেওয়া হয়েছে। অডিওতে উল্লিখিত ঘটনা সঠিক নয়।