বৃহস্পতিবার- ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

জরিমানা ছাড়াই মোটরযানের কাগজপত্র হালনাগাদের সুযোগ

জরিমানা ছাড়াই মোটরযানের কাগজপত্র হালনাগাদের সুযোগ
print news
  • সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী, কোনো গাড়ির ফিটনেস না থাকলে মালিককে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

কোনো রকম জরিমানা ছাড়াই মোটরযানের ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন ও রুট পারমিটসহ সবধরণেরকাগজপত্র হালনাগাদ করতে পারবেন মালিকরা। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যানুযায়ী ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির মধ্যে ৭,৪৬,২৪১টি গাড়ির ভ্যাটসহ ৩৯,০৪২,৬৫৮,২৬২ টাকা ফিটনেস ফি, ৮,০১,৭৮৯টি গাড়ির ভ্যাটসহ ৯৬,৮০২,৪৮৬,২০৪ টাকা সড়ক কর এবং ৪,০৭,৩৫৩টি গাড়ির ভ্যাটসহ ৩৯৬,৯৬৪,৮৪৯ টাকা রুট পারমিট ফি আদায় হয়নি।

এ পরিপ্রেক্ষিতে জরিমানা ছাড়া মূল কর ও ফি জমা দিয়ে সব ধরনের মোটরযানের কাগজপত্র (ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন ও রুট পারমিট) এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হালনাগাদ করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। এর আগে ২০২৪ সালে সরকার এ ধরনের সুযোগ দিয়েছিল।

সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী, কোনো গাড়ির ফিটনেস না থাকলে মালিককে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রয়েছে ৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪টি। এর মধ্যে বাস ১৩ হাজার ৮৯০টি, কার্গো ভ্যান ১ হাজার ৫৪৪টি, কাভার্ড ভ্যান ৫ হাজার ৫৮৯টি, ডেলিভারি ভ্যান ৭ হাজার ৫৭টি, হিউম্যান হলার ১৩ হাজার ৫৪৬টি, জিপ ৯ হাজার ৬৬০টি, মাইক্রোবাস ২১ হাজার ৭৮৭টি, মিনিবাস ৮ হাজার ৭৪৮টি, পিকআপ ৪৯ হাজার ৮০৮টি, ট্রাক ৫১ হাজার ৫৭৫টি, প্রাইভেট কার ৪৬ হাজার ১৩৩টি, ট্যাক্সিক্যাব ১৬ হাজার ৯৪৫টি এবং অটোরিকশা ১ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৭টি। এ ছাড়া ট্যাংকার, ট্রাক্টর, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন ফিটনেসবিহীন গাড়ি রয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের চিঠি সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সড়কপথে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়াসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিআরটিএ-এর প্রধান কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও সেটি ভস্মীভূত হওয়ায় সব ধরনের কার্যক্রমে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। পরবর্তী সময়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ১২টি জেলায় ব্যাপক বন্যায় জনজীবন দুর্ভোগে পড়ে ও রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই দুর্যোগকালীন গণ ও পণ্য পরিবহন মালিকরা চরম ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ব্যাংকঋণের কিস্তি পরিশোধ, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও গাড়িগুলো রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের ক্ষেত্রে পরিবহন মালিকরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। ফলে গণ ও পণ্য পরিবহন মালিকরা সময়মতো কাগজপত্রাদি হালনাগাদ করতে পারেননি। এ প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষে বিআরটিএ বরাবর আবেদন করায় সরকার তাদের জরিমানা ছাড়া মূল কর ও ফি জমা দিয়ে সব ধরনের মোটরযানের কাগজপত্র (ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিট) এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স হালনাগাদ করার সুযোগ দিয়েছে।

সরকার আশা করছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মোটরযান চলাচলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন কাগজপত্র সম্পর্কিত ঝামেলা কমবে। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে, কারণ আরও অনেক গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করবে। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অসাধু কাজ বা কাগজপত্রে অনিয়মের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

জনপ্রিয়