
হাইকোর্টের রায়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যাবস্থা বাতিল হওয়ার মাধ্যমে পুনর্বহাল হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের হাইকোর্ট বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ বেশকিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না মর্মে জারি করা রুলে এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ৫ ডিসেম্বর দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে এ মর্মে জারি করা রুলের রায়ের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সংবিধান হলো আমাদের সর্বোচ্চ আইন এবং অনুচ্ছেদ ৭ হলো এর ধ্রুবতারা। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল। তবে পঞ্চদশ সংশোধনী পুরোপুরি বাতিল হবে না। সংবিধানের মূল কাঠামো হচ্ছে গণতন্ত্র। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই পারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। সংবিধানের সৌন্দর্য হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়ন। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এই রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলে বিএনপির পক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এরপর ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন, রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল।
জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এবং চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
এর আগে ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বাতিল করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এ সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়।