
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে তোপের মুখে পড়েছেন নানা কারণে আলোচিত হাসপাতালটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নির্বাহী সদস্য লায়ন ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছার চৌধুরী।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত—এমন দাবিতে আনুমানিক ১০-১২ জন যুবক তাকে ডায়াবেটিক জেনারেলর হাসপাতালের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে হাসপাতালের ওই কক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সিএমপির খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ মজিবুর রহমান। তিনি বলে, তাকে জনরোষ থেকে বাঁচাতে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়েছেন। তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছার চৌধুরী চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার শিলাইগড়া গ্রামের নুরুল আবছার চৌধুরীর ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মীর নাছির উদ্দীনের উন্নয়ন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে জাবেদ আবছার আওয়ামী লীগ বা দলটির অঙ্গসংগঠনের কোনো পদবীতে আছেন কিনা তা জানা যায়নি। তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নির্বাহী কমিটির সদস্য।
ঘটনাস্থলে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, লায়ন ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছার চৌধুরী আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত—এমন দাবি করে আনুমানিক ১০-১২ জন যুবক হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়। তারা তাকে হাসপাতালে অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে সেখানে খুলশী থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
হাসপাতালে কর্মরত একজন কর্মচারী জানিয়েছেন, জাবেদ আবছার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক চর্চা শিশু কিশোর সংগঠন নামে একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগের আমলের অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের সাথেও তার সখ্যতা ছিল।
ঘটনাস্থলে যাওয়া খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন বলেন, আমরা খবর পাই জাবেদ আবছারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেখানে গিয়ে আমরা তাকে একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। সেখানে যারা উপস্থিত ছিল তাদের দাবি তিনি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগে লায়ন ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছার চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও ও দূর্নীতির অবিযোগ উঠে। এ নিয়ে চট্টগ্রামের একটি গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
তাঁদের বিক্ষোভের মুখে হাসপাতালের বিভিন্ন পদে থাকা তিনজন পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগকৃতরা হলেন প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমান উল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল এবং পরিচালক নওশাদ আজগর চৌধুরী। তিনজনই বহিষ্কৃত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর আত্মীয়। অনিয়মের অভিযোগে ২৫ জানুয়ারি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কমিটি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বাতিল করা হয়। এর পরও জাহাঙ্গীর চৌধুরী নগরের জাকির হোসেন রোডের হাসপাতালটির কর্তৃত্ব ছাড়ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠে।