
চট্টগ্রাম মহানগরীর সবকটি হাট-বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ছোট-বড় সব সাইজের ইলিশ। তবে দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা স্বাদ নিতে পারছে না মাছের রাজা ইলিশের। ফলে বেচাকেনাও তেমন জমছে না। এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় নগরীর চকবাজারে কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা সঞ্জয় দাশ বলেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ ভালো। তবে নতুন আসায় দাম কিছুটা বেশি। সরবরাহ আরও বাড়লে ধীরে ধীরে দাম কমবে। তবে আপাতত দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা কিনতে পারছে না বাঙালীর প্রিয় খাবার ইলিশ মাছ।
তিনি জানান, প্রায় মাছের দোকানে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ সাজানো রয়েছে। তম্মধ্যে ইলিশ মাছের সংখ্যা বেশি। বর্তমানে ১ কেজি ওজনের ইলিশ মাছের দাম ১২০০ টাকা, ২ কেজি ওজনের ২২০০ টাকা, দেড় কেজি বা তার চেয়ে বেশি ১৮০০ টাকা। এক কেজির কম ইলিশের কেজি হাজার টাকা। আধাকেজির নিচের সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হচ্ছে! এ অবস্থায় প্রায় সব ক্রেতাই মাছের দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন।
একই কথা বলেছেন নগরীর কাজীর দেউরি বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী দেবরাজ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাজারে ইলিশ মাছের ভালোই সরবরাহ দেখছি। কিন্তু দাম বেশ চড়া। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম ১২০০-১৮০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম নিচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, ছোট ইলিশের কেজি ৭০০-৮০০ টাকা। এছাড়া জাটকা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এত দামে ইলিশ কিনব কীভাবে?
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে বিভিন্ন সাইজের ইলিশের দেখা যাচ্ছে। তবে দাম এখনও নাগালের বাইরে। দাম শুনে ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। নগরীর বহদ্দারহাট বাজারে মাছ কাটায় ব্যস্ত আমির হোসেন বলেন, বাজারে ইলিশের বিক্রি এখনও কম। সারাদিনে মিলে ৪-৫টির বেশি ইলিশ মাছ কাটিনি।
মাছ বিক্রেতারা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর সমুদ্রে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। মাছ নিয়ে ফিরতে শুরু করেছে জেলেরা। সাগরে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়লে দামও কমতে শুরু করবে। তবে এখন মাছের দাম বাড়ার জন্য জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিও অনেকটা দায়ী।
মাছ ব্যবসায়ীদে মতে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। ট্রলারবোঝাই মাছ নিয়ে ফিশারি ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। তবে সাগরে যে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে, তা সেরকম নয়। সেরকম হলে সরবরাহও বাড়বে, দামও কমবে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ফিশারীঘাটে অবস্থান করা মাছ ধরা ট্রলারের জেলে সুলতান আহমেদ বলেন একই কথা। তিনি বলেন, বাজারে আগের চেয়ে এবার দ্বিগুণ দামে জ্বালানি তেল কিনতে হচ্ছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় মাছ ধরা জেলেদের পারিশ্রমিকও বেড়েছে। এ কারণে মাছের দাম বেড়েছে। তবে মাছ এখন যে পরিমাণে ধরা পড়ছে তার চেয়ে আরও বেশি ধরা পড়লে দাম কমবে।