বৃহস্পতিবার- ২৭ মার্চ, ২০২৫

নির্বাচনে জয় নিয়ে নির্ভার চট্টগ্রামের তিন মন্ত্রী

print news

“চট্টগ্রামের তিন আসনে তিন মন্ত্রীর বিপরীতে দলের কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের অধিকাংশই এলাকার ভোটারদের কাছে অপরিচিত। ফলে জয় নিয়ে চিন্তামুক্ত নৌকার এই তিন প্রার্থী। প্রচারণার মাঠেও তারা হেলেদুলে মনের সুখে সময় কাটাচ্ছেন। -এমনটাই মনে করছেন নেতাকর্মীরা।”

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন খুব বেশি দূরে নয়, এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ১৩টিতে জমে উঠেছে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতিক নৌকার প্রার্থীদের সাথে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতা। কিন্তু সেরকম প্রতিদ্বন্ধিতা নেই চট্টগ্রামের তিন আসনে।

এই তিন আসনে নৌকার প্রার্থী ক্ষমতাসীন দলের তিন মন্ত্রী। এরা হচ্ছেন  তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও আংশিক বোয়ালখালী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। আরেকজন হলেন ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনি চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী। অপরজন হলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনের প্রার্থী।

এই তিন আসনে তাদের বিপরীতে দলের কোনও স্বতন্ত্র প্রার্থীও নেই। যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের অধিকাংশই এলাকার ভোটারদের কাছে অপরিচিত। ফলে জয় নিয়ে চিন্তামুক্ত নৌকার এই তিন প্রার্থী। প্রচারণার মাঠেও তারা হেলেদুলে মনের সুখে সময় কাটাচ্ছেন। এমনটাই মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীরা জানান, চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নৌকা প্রতীকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী। তারা হলেন-ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আহমদ রেজা (চেয়ার), তৃণমূল বিএনপির খোরশেদ আলম (সোনালী আঁশ), জাতীয় পার্টির আহমেদ রানা (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ ইকবাল হাছান (মোমবাতি) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. মোরশেদ আলম (একতারা)। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রার্থী প্রচারণায় নেই। অনেকে এলাকায় পোস্টারও দেননি। আর দলের কেউ প্রভাবশালী এই মন্ত্রীর প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী হওয়ার সাহসও দেখাননি।

একইভাবে চট্টগ্রাম-৯ আসনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর নৌকা প্রতীকের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করার সাহস দেখাননি দলের কোন নেতাকর্মী। এই প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যারা রয়েছেন তারা হলেন- জাতীয় পার্টির সানজিদ রশিদ চৌধুরী (লাঙ্গল), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ন্যাপের মিটল দাশ গুপ্ত (কুঁড়েঘর), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম (মোমবাতি), কল্যাণ পার্টির সুহাম্মদ নুরুল হোসাইন (হাতঘড়ি) ও তৃণমূল বিএনপির সুজিত সাহা (সোনালী আঁশ)। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পোস্টার ও প্রচারণা চোখে পড়লেও অন্যরা মাঠে নেই।

“ভোটাররা বলছেন, শক্ত কোন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় জয় নিয়ে এই তিন মন্ত্রী অনেকটাই নির্ভার। তবে প্রতিদিন পথসভা, গণসংযোগ এবং প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকার এই প্রার্থী। অন্য প্রার্থীদের কাউকে ভোট চাইতে মাঠে তেমন দেখা যাচ্ছে না।”

এদিকে চট্টগ্রাম-১৩ আসনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় জন। তারা হলেন জাতীয় পার্টির আবদুর রব চৌধুরী (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহমেদ চৌধুরী (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আরিফ মঈন উদ্দিন (একতারা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের রশিদুল হক (বটগাছ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসেন (মোমবাতি) ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন (চেয়ার)। এর মধ্যে লাঙ্গল আর নৌকা ছাড়া প্রচারণার মাঠে নেই অন্য প্রার্থীরা।

ভোটাররা বলছেন, শক্ত কোন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় জয় নিয়ে এই তিন মন্ত্রী অনেকটাই নির্ভার। তবে প্রতিদিন পথসভা, গণসংযোগ এবং প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকার এই প্রার্থী। অন্য প্রার্থীদের কাউকে ভোট চাইতে মাঠে তেমন দেখা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দুই লাখ ১৭ হাজার ১৫৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. নুরুল আলম পেয়েছিলেন ছয় হাজার ৬৫ ভোট।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী পেয়েছিলেন দুই লাখ ২৩ হাজার ৬১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছিলেন ১৭ হাজার ৬৪২ ভোট।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী পেয়েছিলেন দুই লাখ ৪৩ হাজার ৪১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজাম পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৮৫৩ ভোট।

আবারও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‌‘আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বিএনপির ভোট বর্জনের ডাকে সাড়া না দিয়ে ভোটারদের নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাই।’

একইভাবে ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, মন্ত্রীর চেয়ার আমার কোন ব্যক্তিগত কাজে কোন সময় ব্যবহার করিনি। আমি কারো ক্ষতি করিনি। নিজের নির্বাচনী এলাকা ও দেশের উন্নয়নে সর্বদা খেটেছি। মানুষ আমাকে ভোট দেবে। আমি আবারও নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি নিজের নির্বাচনি এলাকার উন্নয়নের জন্য রাত-দিন খেটেছি। উন্নয়নের কারণে এলাকার ভোটার সন্তুষ্ট। খুশি হয়ে তারা আমাকে ভোট দিবেন। আমিও আবার নির্বাচিত হবো।

ঈশান/খম/সুপ

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page