“১৪ দলীয় জোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ফটিকছড়িতে নৌকা প্রতীকের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন, সেহেতু তার প্রতি সম্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। এমতাবস্থায় ফটিকছড়িতে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা আমি সমীচীন মনে করছি না। তা ছাড়া আমি যদি নির্বাচনি মাঠে থাকি তাহলে ভোটের যে সমীকরণ হবে, সেখানে আমার প্রাপ্ত ভোটের জন্য নৌকার বিজয় নিশ্চিতকরণে বাধার কারণ হতে পারে বলে আমি মনে করি।”
নৌকার প্রতি সমর্থন জানিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসনের ফুলের মালা প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারে নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি।
নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে আমার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলনে এসেছি। ফটিকছড়িতে আমি চারবারের মধ্যে তিনবারই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি এবং এ নৌকার মাধ্যমে আমি বারবার সম্মানিত হয়েছি।
যেহেতু ১৪ দলীয় জোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ফটিকছড়িতে নৌকা প্রতীকের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন, সেহেতু তার প্রতি সম্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। এমতাবস্থায় ফটিকছড়িতে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা আমি সমীচীন মনে করছি না। তা ছাড়া আমি যদি নির্বাচনি মাঠে থাকি তাহলে ভোটের যে সমীকরণ হবে, সেখানে আমার প্রাপ্ত ভোটের জন্য নৌকার বিজয় নিশ্চিতকরণে বাধার কারণ হতে পারে বলে আমি মনে করি।
তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৪ দলীয় জোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান জানিয়ে ও ফটিকছড়ির সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার নিমিত্তে আমি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৪ থেকে ২০২৩-এ ১০ বছরে ফটিকছড়ি উপজেলায় সড়ক ও জনপথ, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ত্রাণ ও দুর্যোগ, যুব উন্নয়ন, ক্রীড়া, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, টেকনিক্যাল কলেজ, মসজিদ, মন্দির, ব্রিজ, কালভার্ট, সমাজকল্যাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করা হয়েছে।
ছোট-বড় অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। তন্মধ্যে নাজিরহাট পুরাতন হালদা সেতু, হালদা নদীর ওপর সিদ্ধাশ্রম সেতুসহ অনেক জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নাধীন আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি আস্থা ও ভালোবাসায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ) ইতোমধ্যে জীবন বাজি রেখে অনেক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে দেশের জাতীয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনের ৪০ বছরের ধারাবাহিকতার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে অনেক উপকৃত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যেই আমরা পুরস্কৃত হয়েছি।
উল্লেখ্য, নজিবুল বশর এ আসন থেকে চার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে, ১৯৯৬ সালের প্রহসনমূলক নির্বাচনে বিএনপি থেকে এবং ২০১৩ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক তরিকত ফেডারেশন থেকে দু’বার এমপি হন তিনি।
ঈশান/মউ/সুম