
ঈদের চারদিন পরও ফাঁকা চট্টগ্রাম মহানগর। দীর্ঘ ছুটিতে গ্রামের বাড়ি থেকে এখনো ফিরেনি নগরবাসী। এর প্রভাব পড়েছে নগরীর হাট-বাজারগুলোতেও। বলতে গেলে ক্রেতাই নেই চট্টগ্রামের সবকটি হাট-বাজারে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা যায় এমন চিত্র। ক্রেতা না থাকায় হতাশার সুর বিক্রেতাদের মুখেও। এদের মধ্যে সবজি পঁেচ যাওয়ার কথা জানালেন বিক্রেতারা।
অন্যদিকে দেখা যায়, ক্রেতার মতো বিক্রেতাও নেই মাছের বাজারে। তবে বরাবরের মতো তেজ কমেনি মুরগি ও গরুর মাংসের।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগের দিনের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে ৩২০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
আর গরুর মাংস ঈদের মতো কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। খাসি বিক্রয় হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগের দিনের তুলনায় মুরগির দাম কিছুটা কমলেও স্থিতিশীল দরে আসেনি। আর গরুর মাংসের দাম বরাবরের মতোই চড়া, তেজ কমেনি একটুও।
তবে সবজির ঈদের আগের স্থিতিশীল রয়েছে। সবজির মধ্যে কচুরমুখী কেজিপ্রতি মানভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, তিতকরলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ ও শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ক্রেতাই নেই। বিক্রি না থাকায় সবজি পঁচে যাচ্ছে। ঈদের দিন থেকে চার দিনে আমার ২০ হাজার টাকার সবজি পঁচে গেছে। তাই পুরোনো সবজি বিক্রি করে দিতে পারলেই বাচি। অন্যদিকে হাতেগোনা ক্রেতা দেখা গেছে মুরগি ও গরুর মাংসের দোকানে।
নগরীর কর্নেলহাট বাজারের সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, ঈদের ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাজার এরকমই থাকবে। আমরাও নতুন করে সবজি খুব কম তুলছি। আগেরগুলোই বিক্রি করে শেষ করতে পারিনি। নতুন-পুরোনো মিলিয়ে বিক্রি করছি। রবিবারের পর থেকে আশা করছি বিক্রি শুরু হবে।’
অলংকার বাজারের সবজি বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, ‘বাজার এখন খুব খারাপ। আমরা বসে বসে হাজিরা দিচ্ছি। বেচাকেনা নাই। কেনার মানুষ নেই। পুরোনো সবজি পঁেচ যাচ্ছে। তাই কোনো রকমে বিক্রি করার চেষ্টা করছি। যে কজন ক্রেতা আসছেন, তারা যে দাম করছেন তা দিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছি।’
নগরীর বহদ্দারহাটে বাবুল নামে একজন ক্রেতা বলেন, সবজির দাম সহনীয়। মন চাচ্ছে থলে ভরে বাজার করি। কিন্তু ঘরে খাওয়ার মানুষ নাই। তাই আধা কেজি ঢেড়স নিলাম ২০ টাকায়। এছাড়া শসা আর একটা মুরগি নিলাম। মুরগির দাম আগের মতো রয়ে গেছে। তবুও ক্রেতা না থাকায় মলিন মুখে মুরগির ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট বাজারের মুরগি বিক্রেতা তসকির আহমদ বলেন, খামারে মুরগির দাম কমেনি। তাই বাজারেও কমছে না। তবে ক্রেতা না থাকায় বিক্রি কমে গেছে। মাঝে মধ্যে কয়েকটা মুরগি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের ছুটি শেষ হলে ক্রেতা সংকট কাটবে।
নগরীর চকবাজারে গরুর গোশত বিক্রেতা আবু হানিফ বলেন, ঈদে গরুর গোশতের চাহিদা বেশি। ঈদের পরে ক্রেতা কমলেও গোশত বিক্রি তেমন খারাপ না। তাছাড়া গোশত তো আর সবজির মতো পঁচে যাচ্ছে না। দাম কমানোর সুযোগ নেই।