
পীথাগোরাস বা এরাটোস্থেনিস, গ্রিক দার্শনিকরাই প্রথম সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন পৃথিবীর গোলাকার। পৃথিবীর আকৃতি নিয়ে বিজ্ঞানিদেরও মতপার্থক্য নেই। তবে ২০২৪ সালে এসেও কিছু মানুষ মনে করেন পৃথিবী ফ্ল্যাট (চ্যাপ্টা)। সম্প্রতি এমনটা দাবি করেছেন জেরান ক্যাম্পানেলা নামে এক ইউটিউবার।
তিনি দাবি করেন, পৃথিবীর আকৃতি গোল বলে ভুল বুঝিয়ে আসা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু আদতে পৃথিবীর আকৃতি চ্যাপ্টা। আর বললেই তো তা মেনে নেওয়া যায় না, প্রমাণ করতে হবে। ব্যস! নিজের ধারণার প্রমাণ দিতে শুরু করলেন অ্যান্টার্কটিকা অভিযান। কর্মসূচির নাম দেন ‘দ্য ফাইনাল এক্সপেরিমেন্ট’, যার খরচ ৩১ লাখ টাকা।
অভিযান শুরুর আগে জেরান মনে করতেন, আন্টার্কটিকায় সূর্য পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের থেকে ভিন্ন আচরণ করে। সেখানে সূর্য উদয় বা অস্ত যায় না। বরং স্থির থাকে। কিন্তু সেই ধারণা ভ্রান্ত প্রমাণিত হয় আন্টার্কটিকা ভ্রমণের পরেই। আন্টার্কটিকার দক্ষিণতম প্রান্তে সফর করেছিলেন জেরান।
সেখানেই ‘মিডনাইট সান’ দেখার সুযোগ হয় জেরানের। সেখানে গ্রীষ্মকালে সূর্য দিনে ২৪ ঘণ্টা দৃশ্যমান থাকে। যা পৃথিবীর গোলাকার আকৃতি তত্ত্ব প্রমাণের অন্যতম উদাহরণ। এর পরেই নিজের ভুল স্বীকার করেও নেন জেরান। জেরান বলেন, ‘কখনও কখনও ভুল হয়েই থাকে।’
তবে জেরান একা নন। পৃথিবী গোলাকার আকৃতির ধারণা ভুল বলে দাবি করে বহুকাল আগেই ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’-এর কথা তুলে ধরেছিল একাধিক গোষ্ঠী। সেই ধারণা এখনও বয়ে নিয়ে চলেছেন কিছু মানুষ। ১৯৫৬ সালে ব্রিটেনে স্থাপিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্ল্যাট আর্থ রিসার্চ সোসাইটি’। সেটারই নাম পরিবর্তন করে ২০০৯ সালে আমেরিকায় তৈরি হয় ‘ফ্ল্যাট আর্থ সোসাইটি’।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্বঘোষিত বিজ্ঞানী মাইক হিউজও একটি বাষ্পচালিত রকেট তৈরি করে এই তত্ত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনিও ব্যর্থ হন। অবশেষে তা প্রমাণ করতে গিয়ে জেরানও খোয়ালেন প্রায় ৩১ লাখ টাকা।