
বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘মেঘনা অ্যাডভেঞ্চার ও মেঘনা ক্রাউন’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পালানো পাঁচ নাবিকদের বিরুদ্ধে মেরিন কোর্টে মামলা দিচ্ছে সরকারি সমুদ্র পরিবহন অফিস। এতে ফেঁসে যাচ্ছেন নাবিকদের পরিবারও।
সমুদ্র পরিবহন অফিসের তথ্যমতে, গত বছর ২৭ নভেম্বর রাশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স বন্দরে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ মেঘনা অ্যাডভেঞ্চার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন চার নাবিক। এর এক মাসের মাথায় ২৬ ডিসেম্বর মেঘনা ক্রাউন নামের জাহাজ থেকে ব্রাজিলে পালিয়েছেন আরেকজন নাবিক।
সরকারি সমুদ্র পরিবহন অফিস ইতিমধ্যে পলাতক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে এসব নাবিকের সিডিসি (কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেট) বাতিল করেছে। তিন মাসের সময় দিয়ে শোকজ করেছে। মে মাসেই শোকজের সময় শেষ হয়ে যায়। শোকজের ৯০ দিন পর মামলা করার নিয়ম রয়েছে। সে হিসাবে সরকার বাদী মামলায় অজামিনযোগ্য আসামি হচ্ছেন এ পাঁচ নাবিক। একই সঙ্গে নাবিকদের পরিবার থেকে দিতে হবে ৫ লাখ টাকার বন্ড জরিমানা।
জানা গেছে, ‘মেঘনা অ্যাডভেঞ্চার’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি নদী এলাকায় জাহাজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে চিফ কুক- নাটোরের মো. আরিফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের জিএস মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ডেক ক্যাডেট কিশোরগঞ্জের মো. সোহানুর ও দিনাজপুরের আব্দুল কুদ্দুস পালিয়ে যান।
‘মেঘনা ক্রাউন’ থেকে ব্রাজিলের সালভাদোর বন্দরে ‘শোর-লিভ’ নিয়ে নোয়াখালীর মো. ইমাম হোসেন আর ফিরে আসেননি। ওয়েলার হিসেবে তিনি জাহাজটিতে কর্মরত ছিলেন। এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে এক ধরনের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে বিএসসির জাহাজ। আন্তর্জাতিক নৌপরিবহন খাতে যা বিএসসিসহ দেশের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলে দিয়েছিল।
মেঘনা গ্রুপের সমুদ্রগামী জাহাজ বহরের মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, ‘জাহাজ থেকে নাবিক পালিয়েছেন এটি মোটেও কাম্য ছিল না। তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বারবার এমন ঘটনা আমাদের শিপিং সেক্টরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। তাই ‘আমরাও পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে নতুন নাবিক নিয়োগের বিষয়ে কঠোর হয়েছি। নাবিকদের বন্ড নিয়ে নিয়োগ দিচ্ছি।’
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, বেটার অপরচুনিটির জন্য এ কাজগুলো করেন নাবিকরা। তবে জাহাজ থেকে নাবিক পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে কারা যুক্ত, তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি বন্ধ করা না গেলে বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান মেরিন সেক্টর বিপর্যয়ে পড়বে।