রাতভর ভারি বর্ষণে ফের ডুবল চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা। রবিবার (২৭ আগস্ট) সকালে ঘুম থেকে উঠে জলমগ্ন হয়ে পড়ার দৃশ্য দেখে নগরীর মানুষ। কিছু এলাকার সড়ক ও ভবন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরীর বাসিন্দারা। দুর্ভোগে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও।
নগরবাসীরা জানান, বৃষ্টি ও জলজটে একাকার বহদ্দারহাট ও মুরাদপুর এলাকা। তলিয়ে গেছে সড়ক ও অলিগলি। ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা ও নোংরা পানি সড়কে উঠে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল থাকায় পানি সরতে না পেরে অনেক ঘর ও দোকানপাটের ভেতর পানি ঢুকে যায়।
বৃষ্টিতে কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এলাকা মোহরা, হামিদচর, চর রাঙামাটিয়া, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, বহদ্দারহাট, বাস টার্মিনাল, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, খাজা রোড, মিয়াখান নগর, প্রবর্তক মোড় ডুবে গেছে।
এছাড়া আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, শান্তিবাগ আবাসিক, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, রিয়াজ উদ্দিন বাজারসহ নগরীর নিচু এলাকার সড়কগুলোতে হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতা দেখা দেয় মেহেদীবাগ, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, ছোটপুল-বড়পুল, গোসাইলডাঙ্গা ও হালিশহরের বিভিন্ন এলাকায়।
এসব এলাকার প্রধান সড়কের কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর, আবার কোথাও বুক ছুঁই ছুঁই পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ। ফলে সকালে কর্মস্থলগামী মানুষকে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। চরম দুর্ভোগে পড়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও। অনেক পরীক্ষার্থীকে হাটু পানি মাড়িয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে ছুটতে দেখা যায়।
বাকলিয়া সৈয়দ শাহ রোডের বাসিন্দা শেখ সারোয়ার আলম বলেন, গভীর রাতে ভারি বর্ষণ হয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি ঘরের ভেতরে থই থই করছে পানি। ভিজে গেছে আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। কিছুদিন পরপরই এ অবস্থা হচ্ছে। এর যেন কোনো প্রতিকার নেই।
নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা নোমানুল হক বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতার নিরসন করার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। কিন্তু জলাবদ্ধতা কমছে না। বরং প্রতি বছরই দেখছি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই পানি উঠবে, এটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চললেও আমরা সুফল পাচ্ছি না। বহদ্দারহাট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত হাঁটুপানি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগরীর বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা ও পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের চিত্র পোস্ট করেছেন অনেকে। কেউ কেউ জলাবদ্ধ এ নগরীকে বঙ্গোপসাগর, কেউবা কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে তুলনা করে নানা উপহাসধর্মী পোস্টও দিয়েছেন।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল দাস বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভবে শনিবার মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ৮৩ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।