রবিবার- ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম হাজেরা তজু ডিগ্রী কলেজ

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ৫১ শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃত ফেল!

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ৫১ শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃত ফেল!

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকায় চট্টগ্রাম মহানগরের হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজের ৫১ শিক্ষার্থীকে এইচএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে ফরম পূরণ করতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপৃল) এই অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এসময় আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফরম পূরণের সুযোগ না দিলে ২০ এপৃল রবিবার থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাওয়াদুল আমিন বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর আমরা কলেজের মাসিক বেতন-ভর্তি ফি কমানো এবং দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করি। এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দাবি মানতে বাধ্য হয়। সেই থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ৯০ লাখ টাকার সিগারেটভর্তি লাগেজ

তিনি বলেন, আন্দোলনের ক্ষোভ থেকে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আমাদের ৫১ শিক্ষার্থীকে মডেল টেস্ট পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করানো হয়।

জাওয়াদুল আমিন আরও বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করেছি আমাদের লিখিত খাতাগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করতে। তারা অনীহা প্রকাশ করেছেন। উল্টো কর্তৃপক্ষ আমাদের হেনস্তা করে যাচ্ছে।

জাওয়াদুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, ফ্যাসিস্টের দোসর মুজিবুরের কাছে ক্ষমা চাইতে বিভিন্ন সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের চাপ প্রয়োগ করি। নানা সময়ে আমাদের অভিভাবকদের ডেকে হয়রানি করে। আন্দোলনের পর থেকে আমাদের অনেক শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী কলেজ পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে আমরা এর বিচার চাই।

আরও পড়ুন :  লটারিতে সিএমপির ১৫ থানার ওসির চেয়ার বদল

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি। একই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই কলেজের ম্যানেজমেন্ট একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর অনুসারী। শুনেছি ওই বাচ্চারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত ছিল, তাই তাদেরকে ফরম পূরণ করতে দিচ্ছে না। এখন ফেল করলেও কীভাবে এতোসংখ্যক শিক্ষার্থী ফের করে! এটা তো কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। তাছাড়া পরীক্ষার আরো প্রায় তিন মাস বাকি আছে, ভালো করে প্রিপারেশন নিলে তারা পাস করতে পারে।

আরও পড়ুন :  খাতুনগঞ্জে উপচে পড়ছে ভোগ্যপণ্য

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, আমরা ঘটনাটা একটু করে শুনেছি যে তাদেরকে ইচ্ছাকৃত ফেল করানো হয়েছে এবং পরীক্ষার খাতা নাকি দেখাচ্ছে না। কিন্তু ভেতরের কারণ কী সে বিষয়টা জানি না। এখন তাদের (ভুক্তোভোগী) কেউ যদি আবেদন করে তাহলে আমরা তদন্ত করে বিষয়টা খতিয়ে দেখতে পারি। আসলে তারা পাস করেছে নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়েছে। এইটুকুই আমরা করতে পারি।

উল্লেখ্য, আগামী ২৬ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিবাবকরা।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page