
ভারতে যৌন পেশায় জড়িত স্বামী-স্ত্রী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
রবিবার (২৩ জুন) রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজদি থানার চন্দ্রনগর আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো. তারেক (৩৪) বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া এলাকার মাহমুদুল হকের বাড়ির আহম্মদ ছাফার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনজয় কুমার সিনহা। ওসি জানান, ভুক্তভোগী এক নারী ভারত থেকে পালিয়ে এসে পুলিশের শরণাপন্ন হন। তিনি জানান যে, তিনি ও তার এক বান্ধবী গত এপ্রিলে পোশাক কারখানার চাকরি ছেড়ে দেন এবং বেকার ঘুরতে থাকেন। মে মাসে তাদের সঙ্গে পূর্বপরিচিত এক নারীর কথা হয়। সেই নারী মূলত তারেক ও তার স্ত্রীর চক্রের সদস্য। তিনি এই দুইজনকে জানান ভারতে তার পরিচিত একজন আপা আছে যিনি পার্লারে চাকরি করেন। তারা যদি ভারতে চাকরি করতে ইচ্ছুক হন তাহলে তিনি সেই আপার সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর তারা রাজি হলে তাদেরকে তারেক ও তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন সেই নারী।
পরে তাদের কথামতে গত ২৯ মে নগরের দামপাড়া থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন তারা। এ সময় তাদের সঙ্গে তারেক ও তার স্ত্রীসহ দুই নারী ও দুই পুরুষ ছিলেন। একই সঙ্গে আরও কয়েকজন দালাল যোগ দেয় তাদের সঙ্গে। এভাবে তাদের দুইজনকে যশোরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বাস ও রিকশায় তাদেরকে যশোরের একটি সীমান্তবর্তী গ্রামে নেওয়া হয়। পরে তাদেরকে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে পাচার করা হয়। সেখানে আসামি তারেক ও তার স্ত্রী এবং তাদের চক্রের সদস্যরা একাধিক হোটেলে নিয়ে তাদেরকে যৌন কাজে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। রাজি না হলে মারধর ও গালিগালাজ করা হয়। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ভিকটিমদের নাম প্রকাশ করেনি।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের উত্তর বিভাগের এসি বেলায়েত হোসেন বলেন, তারেক তার স্ত্রী ও আরেক বান্ধবীসহ চাকরিজীবী মেয়েদের টার্গেট করে যশোর বর্ডার দিয়ে ভারতে পাচার করত। তারা বেশি বেতনে চাকরির কথা বলে নেওয়া হলেও সেখানে যৌন কাজে বাধ্য করত। গ্রেপ্তার আসামি আগেও এ ধরনের অপরাধে ছিল বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
ওসি সনজয় কুমার সিনহা বলেন, চক্রটির কেউ কেউ পোশাক কারখানার সমস্যাগ্রস্ত নারীদের সঙ্গে চাকরি করে সখ্যতা গড়ে তোলে। ধীরে ধীরে পরিচয়ের মাধ্যমে তাদেরকে টোপ দেয়। এরপর ভারতে পাচার করে দেয়। আমরা এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছি এবং মামলা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।