বৃহস্পতিবার- ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫

মানুষের পাশে অসুস্থ বন্যহাতির শাবক, যাচ্ছে না বনে

print news

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের জঙ্গল পাইরাং এলাকায় বন্যহাতির একটি শাবক লোকালয়ে নেমে আসে। এরপর কাদায় আটকে পড়া হাতি শাবকটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগের স্থানীয় কর্মীরা। এ সময় শাবকটি জ্বরে আক্রান্ত ছিল।

অসুস্থ শাবকটি জঙ্গলে রেখে আসা হলেও ফের লোকালয়ে চলে আসে। বর্তমানে স্থানীয়দের সঙ্গে লোকালয়ে দিন কাটছে শাবকটির। শাবকটিকে দৈনিক ৮ থেকে ১০ লিটার ল্যাকটোজেন দুধ খাওয়াতে হচ্ছে। হাতি শাবকটিকে দেখার জন্য স্থানীয় জনগণ ও শিশুরা ভিড় করছে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাঁশখালীর পাইরাং এলাকায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত এগারোটার পর শাবকটির মা-সহ হাতির পাল এসেছিল। খবর পেয়ে আমাদের বন বিভাগের কর্মীরা হাতি শাবকটিকে কাছাকাছি নিয়ে রেখেছিল। যেন হাতির পাল এটিকে নিয়ে যায়। কিন্তু শাবকটিকে তারা নিয়ে যায়নি। এরপর শাবকটি আবার ফিরে আসে।

আরও পড়ুন :  মাদক বাণিজ্যেরও গডফাদার ষোলশহর রেল জংশনের মাস্টার জয়নাল!

তিনি বলেন, হাতির শাবকটিকে আমরা তার প্রকৃত আবাসস্থলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এতে অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়েছে শাবকটির সেবা-শুশ্রƒষার জন্য হাতির পাল শাবকটিকে নিয়ে যায়নি। প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তাকে খবর দিয়ে শাবকটিকে এখন খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বাঁশখালী জলদী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, তিনদিন আগে হাতি শাবকটি কাদায় আটকে পড়ার পর এটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় আমরা শাবকটিকে দুর্বল ও অসুস্থ অবস্থায় পাই। হাতির শাবকটিকে এখন দিনে ৮-১০ লিটার ল্যাকটোজেন দুধ খাওয়াতে হচ্ছে। গরুর দুধ খাওয়ালেও হচ্ছে না।

আরও পড়ুন :  মাদক বাণিজ্যেরও গডফাদার ষোলশহর রেল জংশনের মাস্টার জয়নাল!

তিনি বলেন, সেবা-শুশ্রুষার পর আমরা আরও কয়েকদিন শাবকটিকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। হাতির পালটিকে খুঁজে না পেলে শাবকটিকে পরিচর্যার বিকল্প ব্যবস্থা নেব। প্রাকৃতিকভাবে যদি মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায় তাহলে ভাল হয়। না হলে বিকল্পভাবে হাতি শাবককে বাঁচিয়ে রাখার চিন্তা করা হবে।

চট্টগ্রাম জেলা বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য বলেন, কৃত্রিমভাবে হাতির শাবক পরিচর্যা করা বেশ কঠিন। তাছাড়া শাবকটি স্থানীয় মানুষের পাশ ছাড়ছে না। আশপাশের মানুষও শাবকটি দেখতে পাইরাং এলাকায় ভিড় জমাচ্ছে।

তিনি বলেন, শাবকটিকে পরিবারের কাছে পাঠাতে ব্যর্থ হলে নিরুপায় হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে পাঠাতে হবে। সেখানে তার নতুন আবাসস্থল হবে। তবে আমরা আরও কয়েকদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। শতভাগ চেষ্টা থাকবে বাঁশখালীর যেখান থেকে হাতিটি দলছুট হয়ে যায় সেখানে মিশিয়ে দিতে।

আরও পড়ুন :  মাদক বাণিজ্যেরও গডফাদার ষোলশহর রেল জংশনের মাস্টার জয়নাল!

বন বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১৭ অক্টোবর সরল ইউনিয়নের পাহাড়ি জঙ্গল পাইরাং এলাকায় ১৫-২০ দিন বয়সি পুরুষ হাতির শাবকটি পাহাড়ের পাদদেশে নরম কাদামাটিতে আটকে যাওয়ার খবর পায় বনবিভাগ। পরে বাঁশখালী জলদী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ ও উপজেলা প্রাণি স¤পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দীর নেতৃত্বে শাবকটি উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে পাহাড়ি এলাকায় রেখে আসলে শাবকটি ফের লোকালয়ে নেমে আসে।

বর্তমানে স্থানীয় মানুষদের সাথে লোকালয়ে দিন কাটছে শাবকটির। কেউ কেউ হাতি শাবকটিকে খেতে দিচ্ছেন, সেবা-শুশ্রƒষা করছেন। বন বিভাগের লোকজন ও উপজেলা প্রাণিস¤পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন

No more posts to show