
১৯৯৭ সালের এই দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সংঘাতের অবসান ঘটাতে জনসংহতি সমিতির সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু দীর্ঘ এই সময় পেরিয়ে গেলেও পাহাড়ে শান্তি ফেরেনি। উল্টো নতুন করে তিনটি আঞ্চলিক সংগঠনের জন্ম হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের ‘সদিচ্ছার অভাব’ রয়েছে বলে অভিযোগ এসব সংগঠনের।
শুধু তাই নয়, এই চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপিও। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার ভাষ্য, শেখ হাসিনা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার লোভে এই বৈষম্যমূলক শান্তিচুক্তি করেছিলেন।
জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার বিভাগের প্রধান জুপিটার চাকমা বলেন, বিগত সরকারের আমলে শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ দেখিনি। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়নি।
তিনি বলেন, চুক্তি সম্পাদনের পর ২৭ বছর পেরিয়ে গেলেও চুক্তিটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র ২৫টি বাস্তবায়িত হয়েছে, ১৮টি আংশিক এবং ২৯টি ধারা অবাস্তবায়িত রয়েছে।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমা বলেন, সবার আশা ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে, চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। শেখ হাসিনা সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বললেও তারা বিভিন্ন কৌশলে তা বাস্তবায়ন করেনি। চুক্তিটি অসম্পূর্ণ এবং তা বাস্তবায়নে কার্যকর আন্দোলন গড়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের।
অন্যদিকে বিএনপির দাবি, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে বৈষম্য ও বিভেদ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাহাড়িদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বেড়েছে। শান্তিচুক্তি নিয়ে জনসংহতি সমিতিতে একাধিকবার ভাঙন ধরেছে। চুক্তির পর একটি থেকে জনসংহতি সমিতি চারটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।