মঙ্গলবার- ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

দৈনিক ইশানে প্রতিবেদন প্রকাশে প্রতিক্রিয়া

শাহ আমানতে পণ্য খালাসে এনবিআরের দ্বারস্থ হলেন প্রবাসীরা

print news

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসীদের প্রায় ২৫ টন পণ্য আটকে আছে গত ৫ মাস ধরে। এতে বিমানবন্দরের ওয়্যারহাউসে আটকে থাকা পণ্যগুলোর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ফলে প্রবাসীরা তাদের পণ্য খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দারস্থ হয়েছেন। সম্প্রতি তারা এনবিআরের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো আবেদনে পণ্য খালাসের অনুমতি ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

মূলত ওই ২৫ টন পণ্য খালাস নিতে হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে অনাপত্তিপত্র (ক্লিয়ার পারমিট-সিপি) চেয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। মূলত প্রবাসীদের চালানে ১০০ কেজির বেশি পণ্য থাকায় ওইসব চালাসের পণ্য খালাস বন্ধ রেখে অনাপত্তিপত্র চাওয়া হচ্ছে।

গত ২২ জুলাই ‘শাহ আমানতে পচছে প্রবাসীদের বিপুল পণ্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম দৈনিক ঈশানে। বিষয়টি কাস্টমসের নজরে আসার পর প্রবাসীদের এনবিআরের কাছে আবেদন করার পরামর্শ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রবাসীদর পক্ষ থেকে এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন পাঠানো হয় বলে জানান ভুক্তভোগী প্রবাসীরা।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে গুদাম থেকে রেলের মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও!

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে দৈনিক ঈশানকে এ তথ্য জানান প্রবাসীরা। এরমধ্যে পটিয়া উপজেলার দুবাই প্রবাসী সাইফুল ইসলাম, মোরশেদ হোসেন, আনোয়ারা উপজেলার সৌদি আরব প্রবাসী ইসমাইল হোসেন বলেন, আশা করি এনবিআর আমাদের দু:খ বুঝবেন। আমাদের সমস্যা সমাধানে এনবিআর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

প্রবাসীদের দাবি, তারা ৩ থেকে ৫ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে তারা পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে জমিয়ে রাখে। যাতে দেশে যাওয়ার সময় পরিবারের জন্য ওইসব পণ্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়া যায়। তবে দিন দিন প্রবাসীদের কোণঠাসা করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে প্রবাসীদের আনা পারিবারিক ব্যবহারের কার্গো পণ্য ও কার্গো ফ্লাইট চিরতরে বন্ধ করে দেবার চক্রান্তের অংশ হিসেবে সিপি দাখিলের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে গুদাম থেকে রেলের মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও!

প্রবাসীরা জানান, গত মে মাসে প্রবাসীদের পাঠানো চট্টগ্রাম কাস্টমসের এয়ারপোর্ট ও এয়ারফ্রেইট ইউনিটের ডেপুটি কমিশনার মো. আহসান উল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রবাসীদের পণ্য খালাসে অনাপত্তিপত্র দাখিলের কথা বলা হয়েছে। এমনকি ৩০ দিনের মধ্যে অনাপত্তিপত্র দাখিল করতে না পারলে কাস্টমস আইন অনুযায়ী ওই পণ্য নিলামে চলে যাওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

এছাড়া কাস্টমস কমিশনারের মোখিক নির্দেশের কড়াকড়িতে পণ্যগুলো ছাড় পাচ্ছে না বলে দাবি তোলেন প্রবাসীরা। বোয়ালখালী উপজেলার ওমান প্রবাসী মোহাম্মদ আলী বলেন, গত রমজান এবং ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠালেও সেগুলো খালাস নিতে পারিনি। কাস্টমসের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়ে গত ৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছে ভুক্তভোগী প্রবাসীরা। কিন্তু তাতে কোন সাড়া মেলেনি।

এদিকে প্রবাসীদের পণ্য খালাসে নিয়োজিত সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানায়, প্রবাসীদের পণ্য খালাস নিতে না পারায় প্রতিদিন বাড়ছে বিমানবন্দরের ওয়্যারহাউস চার্জ। এমনকি দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে প্রবাসীদের আনা পণ্য। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশেন অর্গানাইজেশন বিমানবন্দরের সক্ষমতা নিরুপণ করে প্রতিবেদন দেয়। বিমানবন্দরের সক্ষমতার বড় একটি অংশ কার্গো পরিবহন, কার্গো ওয়্যারহাউসের সক্ষমতা। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কার্গো খালাস বন্ধ থাকায় এভিয়েশন সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কাছে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে গুদাম থেকে রেলের মূল্যবান সরঞ্জাম উধাও!

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পণ্যবাহী কার্গো বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বাংলাদেশ বিমান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমসের আয় কমেছে। এর সাথে বড় ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হওয়া ফলমূল ও সবজি রপ্তানিতে। কার্গো ফ্লাইট না থাকায় রপ্তানি হচ্ছে না চট্টগ্রাম থেকে ফলমূল ও সবজি। এতে রপ্তানি বাজার দখল করে নিচ্ছে ভারত, ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশগুলো।

আরও পড়ুন

No more posts to show