বুধবার- ২৬ মার্চ, ২০২৫

শেখ সেলিমের সঙ্গে নায়িকা নিপুণের অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তোলপাড়

শেখ সেলিমের সঙ্গে নায়িকা নিপুণের অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে চলছে তোলপাড়
print news

ঢাকাই সিনেমার বিতর্কিত নায়িকা নিপুণ আক্তার। ২০০৬ সালে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘রত্নগর্ভা মা’ আজও আলোর মুখ দেখেনি। তবে একই বছর ‘পিতার আসন’ সিনেমার মাধ্যমে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। আর সর্বশেষ সিনেমা ‘সুজন মাঝি’ মুখ থুবড়ে পড়ে। আর মাঝখানে থাকা প্রায় অর্ধশত সিনেমাতে অভিনয় শুধু যেন ব্যক্তি স্বার্থে সিনেমাকে ব্যবহার করা।

চিত্রনায়িকা তকমা লাগিয়ে খুব অল্প সময়ে সম্পদের পহাড় গড়েছেন নিপুণ আক্তার। ২০১৬ সালে রাজধানীর বনানীতে ‘টিউলিপ নেইলস অ্যান্ড স্পা’ নামের এ পার্লার খুলে বসেন তিনি। উদ্বোধন করেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শেখ সেলিম। অনেকেই বলেন, এই পার্লারটি শেখ সেলিম উপহার হিসেবে দিয়েছেন স্বামীহারা নিপুণকে।

শুধু পার্লার নয়, নিত্য নতুন গাড়ি, বিদেশ ভ্রমন, মেয়েকে বিদেশে পড়াশোনা সবকিছুই নাকি আসতো রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হাত দিয়ে। বছরের বেশির ভাগ সময় কাটাতেন বিদেশের মাটিতে। দেশে থাকলেও সিনেমার কোনো কাজে খুব একটা দেখা যেত না তাকে। যে সময়টা বিএফডিসিতে থাকতেন, সারাটা সময় চলত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পদচারণা। যা নিয়ে চলছে তোলপাড়।

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে খুঁজে পাওয়া যায়নি এই নায়িকাকে। তবে, গত ১৭ জুলাই ভোরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করে নিপুণ তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে শুরু হয় নানা বিতর্ক। শিল্পী সমিতির কমিটিতে না থেকেও অবৈধভাবে সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করে তোপের মুখে পড়েন এই অভিনেত্রী। বর্তমানে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এই নায়িকাকে। রয়েছেন আত্মগোপনে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করার পর থেকেই অনেক মন্ত্রী ও এমপিসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মী দেশ ছেড়েছেন। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম দেশত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। সঙ্গে রয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণও!

শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার পর থেকেই নিপুণের ব্যবহৃত নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য বেশ দৌঁড়ঝাপ করতে দেখা যায় তাকে। এমনকি এফডিসি পাড়ায় চাউর রয়েছে শেখ সেলিমের সঙ্গে নিপুণের অনৈতিক সম্পর্কের কথা। যার প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচিত জায়েদ খানকে হটিয়ে নিজে চেয়ারে বসে গত দুই বছর শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

শিল্পী সমিতি সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠা বসা তার। সিনেমার পর্দা থেকে মন্ত্রী, এমপিদের ঘরে যাতায়াত ছিল বেশি। ফলে ক্রমেই অভিনয়ের দক্ষতা থেকে রাজনৈতিক কুটিল চিন্তা ঝেকে বসে তার মাথায়। শুরু করেন অবৈধভাবে বিএফডিসিকে নিজের করে নেওয়ার প্রস্তুতি।

সময়টা তখন ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি। একদিকে মিশা-জায়েদ প্যানেল আর অন্যদিকে, কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদ। এই নির্বাচনেও নিপুণ প্রভাব খাটিয়েছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের। এক রাতেই দফায় দফায় নির্বাচনের ফল পরিবর্তন, সুপ্রিম কোর্ট থেকে হাইকোর্ট, রাজনৈতিক প্রভাবশালী লোকদের দিয়ে তারকাদের হুমকি, কি করেননি শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে এই নিপুণ।

এই চিত্র ছিল ২০২৪-২৬ নির্বাচনেও। প্রথমে নির্বাচনের ফলাফল মানলেও দুই সপ্তাহ পর অনিয়মের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল এবং নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। এই যেন বিএফডিসির সোনার চেয়ার। যার ওপর ভর করে সরাসরি রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন এই নায়িকা।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page