সোমবার- ১৯ মে, ২০২৫

সাবেক এমপি ফজলে করিমের দুরাবস্থার ছবি ভাইরাল

সাবেক এমপি ফজলে করিমের দুরাবস্থার ছবি ভাইরাল

ট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী একটি কক্ষের মেঝেতে পাতলা একটি তোশকের ওপর ঘুমুচ্ছেন-এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ছবিটি বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে এই এমপির সুপারিশে সুবিধাভোগীরাও ট্রল করছেন। এর মধ্যে দলের নেতাকর্মী যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সাংবাদিকও। তাদের অনেকে এই ছবি শেয়ার করে লিখেছেন-ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতার দাপট দেখানো মানুষগুলোর এই ছবি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।

তবে এই ছবিটি কোথায়, কখন তোলা হয়েছে তার সঠিক কোন তথ্য শেয়ার বা মন্তব্যকারীরা উল্লেখ করেনি। তাদের মতে, এটি চট্টগ্রাম কারাগারে ঘুমন্ত সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর ছবি। আবার কেউ কেই বলছেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে গেলে সেখানে ঘুমন্ত অবস্থায় তোলা। এ ছাড়াও তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারেও কিছু দিন বন্দি ছিলেন। সেখানেও তোলা হয়ে থাকতে পারে ছবিটি।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ভাইরাল হওয়া ছবি স¤পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুদুর রহমান বলেন, সাবেক এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সেলে আটক রয়েছেন। তার বন্দিদশার একটি ছবি আমার নজরেও এসেছে। তবে কারাগারের সেলের ভেতর ছবি তোলার কোনও সুযোগ নেই। আর এটি চট্টগ্রাম কারাগারের ভেতরের দৃশ্যও নয়। হয়তো তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল সেখানে তোলা হতে পারে।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ছবিটি আমারও নজরে এসেছে। আমি মাত্র কয়েকদিন আগে বদলি হয়ে চট্টগ্রামে এসেছি। এ কারণে কোথায় তোলা হয়েছে- তা বলতে পারছি না।

ফ্লোরে পাতলা একটি তোশকের ওপর ঘুমানোর এই ছবিটি পোস্ট করে ফটিকছড়ি নিউজ নামে একটি পেজে লেখা হয়, চেনা যায়? তবুও মানুষ জুলুম ও অহংকার করে। শিক্ষা নাও, ক্ষমতা কখনও চিরস্থায়ী নয়। দামি কাপড়, বিছানা বদলে গেলো চোখের পলকে।

লিজা আক্তার নিতু নামে একজন ছবিটি পোস্ট দিয়ে তার ফেসবুকে লেখেন, ক্ষমতা কখনও চিরস্থায়ী নয়, তবুও মানুষ অহংকার করে। যে ব্যক্তির জুতায় সামান্য ধূলা লাগতে দেয়নি, সেই ব্যক্তি বিছানার চাদর, বালিশের কাভার ছাড়া ঘুমাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্নগোপনে ছিলেন চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের এমপি ফজলে করিম। ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।

আটকের পর ফজলে করিমকে আখাউড়া থানায় হস্তান্তর কওে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে। সবশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর হেলিকপ্টার যোগে তাকে সেখান থেকে চট্টগ্রামে আনা হয়।

২৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হয়। ওই দিন নির্বাচনী এলাকা রাউজানে হত্যাচেষ্টা মামলায় এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পুলিশ জানায়, রাউজানে মুনিরীয়া যুব তাবলিগ কমিটির দলইনগর-নোয়াজিষপুর শাখায় (এবাদতখানা) ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলার এক নম্বর আসামি ফজলে করিম চৌধুরীর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গত ২৩ আগস্ট সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী, তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন মুনিরীয়া যুব তাবলিগ কমিটির সাংগঠনিক স¤পাদক মুহাম্মদ আলাউদ্দিন।

ফজলে করিম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, অস্ত্রের মুখে জমি লিখিয়ে নেওয়া, ভাঙচুর, দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ এখন পর্যন্ত ফজলে করিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা হয়েছে।

ঈশান/খম/বেবি

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page