বুধবার- ২৬ মার্চ, ২০২৫

সাবেক প্যানেল মেয়র লিটনের বাসায় বিদেশি নকল সিগারেট তৈরীর কারখানা

সাবেক প্যানেল মেয়র লিটনের বাসায় তৈরী হচ্ছে বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট
print news

ট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক প্যানেল মেয়র, ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাংলাধারা’ এর প্রকাশক আবদুস সবুর লিটনের ভাড়া নেওয়া একটি ভবনে তৈরী হচ্ছে ওরিস ও ইজি লাইটসের মতো বিদেশি ব্র্যান্ডসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট। যা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে বিক্রি করা হয়।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এমন তথ্য জানান কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস বিশ্বাস। তিনি বলেন, বৃহ¯পতিবার বিকেলে আবদুস সবুর লিটনের ভাড়া নেওয়া একটি ভবনে আমাদের একটি অভিযানে ধরা পড়ে বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট তৈরীর চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা।

অভিযানে ভবনের নিচতলা থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিগারেট স্ট্যা¤প ও বিদেশি সিগারেট পেপার পাওয়া গেছে। যেগুলো এখনও গণনার কাজ চলমান রয়েছে। গণনার কাজ শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।

কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের এক তথ্যে জানানো হয়, চসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র, ২৫ নং রামপুরা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাধারা এর প্রকাশক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারি আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সবুর লিটন দলীয় ও গণমাধ্যমের প্রভাব খাটিয়ে বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেটের ব্যান্ডরোল মিথ্যা ঘোষণায় স¤পূর্ণ অবৈধভাবে বিদেশ থেকে আমদানি করতেন।

এসব ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে তিনি নগরীর হালিশহর থানার রমনা আবাসিকের মসজিদ গলির জনৈক ফরিদের ভবনে ওরিস ও ইজি লাইটসের মতো বহু নামিদামি বিদেশি ব্র্যান্ডসহ বিভিন্ন রকমের বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট তৈরী করতো। বিদেশি ব্যান্ডরোল আমদানির ঘটনায় তার পরিচালিত বেনামি একাধিক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের মামলা রয়েছে।

কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী নওফেল ও গণমাধ্যমের প্রভাবের কারণে তার বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না। সরকার পতনের পর আবদুস সবুর লিটন পলাতক রয়েছেন। এরপর গত বৃহ¯পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে হালিশহর থানার রমনা আবাসিকের মসজিদ গলির জনৈক ফরিদের ওই ভবনে অভিযান চালায় কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কর্তৃপক্ষ। যা শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়।

অভিযানে ভবনের নিচ তলায় একটি গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিগারেট স্ট্যা¤প ও বিদেশি সিগারেট পেপার পাওয়া গেছে। এখনও গণনার কাজ চলমান রয়েছে। এ কো¤পানি ওরিস ও ইজি লাইটসের মতো বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেটের নকলসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করছে, যা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে বিক্রি করা হয়।

হালিশহর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কর্তৃপক্ষ অভিযানটি চালায়। আমরা শুধু তাদেরকে সহযোগিতা করেছি। বাসাটি সাবেক কাউন্সিলর কিভাবে ভাড়া নিয়েছেন বা কিন্তু বলছে পারছি না। এই কাউন্সিলর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, আবদুস সবুর লিটন এক সময় চট্টগ্রামের বখাটে ছিলেন। তার বাড়ি নারায়গঞ্জে। কিশোর বয়স থেকে সিগারেটের নকল ব্যান্ডরোল বিক্রি, মাদক পাচার, জুয়াসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন তিনি। সেখান থেকে সিগারেট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হন। বর্তমানে কক্সবাজারের চকরিয়া, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও নারায়াণগঞ্জে তার একাধিক সিগারেটের কারখানা রয়েছে। যেখানে তৈরী সিগারেটে অবৈধভাবে আমদানি করা বিদেশি সিগারেটের ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিদেশি সিগারেট হিসেবে বাজারজাত করছেন।

নিষিদ্ধ ব্যান্ড রোল আমদানি, নকল সিগারেট বাজারজাত করা, প্যানেল মেয়র হওয়ার জন্য চসিকের অধিকাংশ কাউন্সিলরকে লাখ টাকা দামের আইফোন উপহার দেওয়া, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলকে সন্তুষ্ট রাখতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়সহ নানা অভিযোগে বিতর্কিত সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন। চট্টগ্রামের রামপুরা ওয়ার্ডে তার রয়েছে একাধিক কিশোর গ্যাংও। তার ভাই খোকন এই কিশোর গ্যাংয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড। একটি হত্যা মামলায় পলাতক রয়েছেন খোকনও।

ঈশান/খম/বেবি

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page