
ধানের শীষ ১৭ বছর ছিল না, তাই মহিলা মেম্বারদেরকেও ১৭ বছর মূল্যায়ন করেনি। মহিলা মেম্বাররা মূল্যায়ন না হলে মহিলারা কিভাবে মূল্যায়িত হবে! এবার ধানের শীষ এসেছে, মহিলারা মূল্যায়িত হবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে নির্বাচিত করব।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজামের মতবিনিময়সভায় এসব কথা বলেন উপজেলা মহিলা লীগের নেত্রী বিলকিস আক্তার। শুধু বিলকিস আক্তার নয়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের আরো বেশ কয়েকজন নেত্রী মতবিনিময়সভা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
তাদের মধ্যে একজন জয় বাংলা ¯ে¬াগান দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগে করা মামলার আসামি। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে তুমুল সমালোচনা চলছে। কেউ কেউ বিলকিস আক্তারের বক্তব্যের ভিডিও ও মঞ্চে আওয়ামী লীগ নেত্রীদের বসে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে কড়া সমালোচনা করছেন।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের তৈলারদ্বীপ এলাকায় নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় সরওয়ার জামাল নিজাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে পুলিশের মামলার আসামিসহ আওয়ামী লীগের একাধিক মহিলা নেত্রীর উপস্থিতি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
জানা যায়, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম-১৩ আসনের বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজামের বাড়িতে মহিলা সমাবেশে তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজাম।
ভাইরাল ভিডিওতে আওয়ামী লীগ নেত্রী বিলকিস আক্তার বলেন, ধানের শীষ ১৭ বছর ছিল না। মহিলা মেম্বারদেরকেও ১৭ বছর মূল্যায়ন করেনি। মহিলা মেম্বাররা মূল্যায়ন না হলে মহিলারা কিভাবে মূল্যায়িত হবে! এবার ধানের শীষ এসেছে, মহিলারা মূল্যায়িত হবে।
বিলকিস আক্তার বলেন, এতদিন মহিলারা ভোট কেন্দ্রে গেলেও তাঁদের ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পারত না। আমাদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেই অধিকার নিশ্চিত করতে হলে ধানের শীষের দরকার। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে নির্বাচিত করব। আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা পাতাও নড়ে না। আল্লাহ চেয়েছেন বলে আমাদের এমপি সাহেব (সরওয়ার জামাল নিজাম) কে দল আবারও মনোনয়ন দিয়েছে। আমরা সকলে দলমত নির্বিশেষে তাঁকে নির্বাচিত করব।’
এছাড়াও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, গত ১৭ অক্টোবর ‘জয় বাংলা’ ¯ে¬াগান দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করার সন্ত্রাস বিরোধী মামলার ৫৭ নম্বর আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক স¤পাদিকা সাজিয়া সুলতানাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক মহিলা নেত্রী। তাঁরা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি ও সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খানসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ছবিও রয়েছে তাঁদের।
এ ঘটনায় বিএনপি ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুকে মো. হাবিবুর রহমান নামের একজন কমেন্ট করে লিখেন, ‘রাজনৈতিকভাবে কতটুকু দেউলিয়া হলে আওয়ামী মহিলা লীগ দিয়ে সমাবেশ করেন! ছি ছি…’। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও ক্ষুব্ধ। তারা বলেন, দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক সুবিধা ভোগ করা এসব নেত্রীরা নির্বাচনের সময় বিএনপি প্রার্থীর সভায় কিভাবে অংশ নেয় এবং ভোট চায়?
আওয়ামী লীগ নেত্রী হয়ে বিএনপির প্রার্থীর মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন, এমন প্রশ্নে সাজিয়া সুলতানা বলেন, মহিলা ইউপি সদস্যের প্রতিনিধি হিসেবে দাওয়াত পেয়েছিলাম। সেখানে যেয়ে দেখি মতবিনিময়সভা। আমার মতো অন্য মহিলা ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিএনপি প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজামের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তার বিশেষ সহকারী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা আকতার নবী চৌধুরী বলেন, উপজেলার নির্বাচিত মহিলা ইউপি সদস্যদের নিয়ে আমরা মতবিনিময়সভার আয়োজন করেছিলাম, ওখানে কে কোন দলের সঙ্গে স¤পৃক্ত আমরা জানি না। তবে এখানে কেউ জয় বাংলার স্লোগান দেয়নি। সরওয়ার জামাল নিজামের নির্দেশে ওই অনুষ্ঠান পরিচালনা আমি নিজেই করেছি।
ঈশান/খম/মউ











































