যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের এমপি এবং সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক এক সপ্তাহ আগে সাংবাদিক মারফত জানতে পারেন বাংলাদেশের দুর্নীতি মামলায় তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এ নিয়ে দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টিউলিপ বলেন, ইউনূস-হাসিনার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলি আমি।
টিউলিপ বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ—ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আমি মায়ের, ভাইয়ের ও বোনের জন্য ঢাকার পূর্বাচলে জমি নিশ্চিত করেছি। এই অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ হাস্যকর’ বলে খণ্ডন করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বিচার শুরুর দিন ধার্য করা হয়েছে ১১ আগস্ট, যদিও তিনি ব্যক্তিগতভাবে হাজির হবেন নাকি ভিডিও কনফারেন্সে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের শেষ দিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরেই বাংলাদেশের রাজনীতি তার জীবনে জোরালোভাবে প্রবেশ করেছে। কিছু ওয়েবসাইটে খবর ছাপা হয় যে, তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছেন।
২০১৩ সালে মস্কো সফরে শেখ হাসিনা ও পুতিনের সঙ্গে ছবি প্রসঙ্গে টিউলিপ বলেছেন, তিনি কেবল বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং চায়ের অনুষ্ঠানে দুই মিনিটের জন্য পুতিনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল—বাস্তবতায় সে কোনও সরকারি বৈঠক ছিল না, বরং সামাজিক অনুষ্ঠানের অংশ ছিল।
২০০৪ সালে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন এমন এক অভিযোগে টিউলিপ দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নন ও ভোটও দেননি। ভুল বুঝে তিনি বলেছিলেন–‘বাবা-মা ফ্ল্যাটটি কিনেছেন’, যা আসলে ‘দুর্বল স্মৃতির কারণে’ ঘটেছে বলে ব্যাখ্যা দেন।
নিরাপত্তার কারণে তিনি ক্রিকলউডস্থ নিজের বাড়ি থেকে স্থানান্তরিত হয়ে একজন পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন—এটাই সত্য। এক স্বাধীন তদন্তে স্বীকারোক্তি মুক্ত হলেও, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট সুনাম ঝুঁকি নিয়ে আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল বলে তার উপদেশ দিয়েছেন বিচার সংশ্লিষ্ট একজন উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী হুগো কিথ কেসির পরামর্শ নিচ্ছেন এবং এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক সমন পাননি বলে জানান টিউলিপ। তিনি বলেছেন, ‘আমি যেন একটি ‘কাফকায়েস্ক দুঃস্বপ্নে’ আটকে পড়েছি, যেখানে আমাকে বিদেশ থেকে বিচার করা হচ্ছে অথচ আমি জানি না অভিযোগগুলো আসলে কী।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায়, দোষী সাব্যস্ত হলে বিষয়টি নতুনভাবে পর্যালোচনার মুখে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
You cannot copy content of this page