
রাজধানীর গুলশানে প্রয়াত শিল্পপতি মাইনুল ইসলামের বাসায় অনধিকার প্রবেশ করে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর হামলা, চাঁদাবাজি এবং ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের (গিকা) চৌধুরীর দুই ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় আরও সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে প্রয়াত শিল্পপতি মাইনুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা আন্না ইসলাম এ মামলা করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন জানান, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)-কে দিয়েছে এবং এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর দুই ছেলে সামির কাদের চৌধুরী ও শাকির কাদের চৌধুরী, সামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের মালিক আরেফিন সামসুল আলম, মেরিনা ইরশাদ, কেশব চন্দ্র নাথ, হারুন অর রশীদ, ফেরদৌস মুনসি, শাহাবুদ্দিন ও ছালাউদ্দিন আব্বাছি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের মডেল টাউন এলাকায় ছয় তলা ভবন নির্মাণে আরেফিন সামসুল আলমের সঙ্গে ২০০৬ সালে মাইনুল ইসলাম ও ফারজানা আন্না ইসলাম দম্পতি চুক্তিপত্র করেন। ২০০৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারা বাড়ি বুঝে পান। পরের বছর ২০০৮ সালের ২৪ মার্চ মারা যান মাইনুল ইসলাম। তার মৃত্যুর পর সামসুল আলম অন্য আসামিদের নিয়ে ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টা করতে থাকেন। আসামিরা জাল দলিল তৈরি করে বাড়ির দ্বিতীয় তলার সম্পূর্ণ ফ্লোর দখলের চেষ্টা করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে জুলাই অভ্যুত্থানের পর আসামিরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। গত ১৪ জুলাই তারা ওই বাড়িতে প্রবেশ করে ফ্ল্যাটগুলোর তালা ভেঙে দখল করার চেষ্টা করেন। তারা ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। ফারজানা আন্না ইসলামকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন।
গত ২৮ আগস্ট আবারও তারা বাসায় প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে বাসার লোকজনকে আহত করেন। তারা ১০ লাখ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণের জিনিসপত্র নিয়ে যান। ৫ কোটি টাকা না দিলে ফ্ল্যাটগুলো দখল করে নেওয়ার হুমকি দেন। চলে যাওয়ার সময় আসামিরা বাসার নিচে গ্যারেজ ভাঙচুর করে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি করেন। হামলায় আহতরা পরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এদিকে অভিযুক্ত সামির কাদের চৌধুরী অবশ্য এটিকে ‘বানোয়াট’ মামলা দাবি করে বলেছেন, গত সাড়ে চার বছরে কখনও তারা ওই ভবনের ধারে কাছে যাননি। ওই নারীর বিরুদ্ধে ১০ দিন আগে থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
রাউজানে হামলাসহ সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৯ জুলাই সামির ও সাকিরের বাবা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদ স্থগিত করা হয়।
You cannot copy content of this page