# চুরি ঢাকতে দেখানো হচ্ছে সিস্টেম লস, অবৈধ সংযোগ
# প্রতিমাসে গচ্ছা সরকারের কোটি টাকা
# এমডির পছন্দের লোক চক্রের হোতা

চট্টগ্রামে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয় ২৪২.৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। তাও সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় অর্ধেক গ্যাস চুরি হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। বাদ যাচ্ছে না বাসা-বাড়িও। যার কিছু অংশ অবৈধ গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে চুরি হিসেবে দেখানো হলেও বাকি অংশ দেখানো হচ্ছে সিস্টেম লস হিসেবে।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গ্যাসের এই অর্থ ঢুকছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী (কেজিডিসিএল)‘র দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ঠিকাদারের সমন্বয়ে গড়ে উঠা চোর চক্রের পকেটে। আর এই চোর চক্র নিয়ন্ত্রণের মূলে রয়েছেন কেজিডিসিএল‘র জনসংযোগ ও সমন্বয়ক ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি ম্যানেজার (ডিজিএম) বেলাল উদ্দিন।

যার সাথে গোপনে যুক্ত রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি-চলতি দায়িত্ব)) সালাহ উদ্দিন। যার খুব পছন্দের লোক ডিজিএম বেলাল উদ্দিন। এছাড়া জড়িত ডিজিএম মার্কেটিং ও ডিজিএম ভিজিল্যান্সও। সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এমন অভিযোগ উঠেছে কেজিডিসিএলের গুণধর এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্যাতিত ও পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারি ও কর্মবঞ্চিত ঠিকাদার শ্রেণির একটি অংশের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তাদের মতে, গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও কেজিডিসিএলে স্ব-স্ব পদে বহাল রয়েছেন তাদের দোসররা। যারা আগে বীরদর্পে অনিয়ম দূর্নীতি করে গেলেও থেমে নেই বর্তমানেও। একটু সতর্ক হলেও অনিয়ম-দূর্নীতি চলেছেই বেপরোয়া গতিতে।

দূর্নীতির বিষয়ে জনপ্রিয় দৈনিক ঈশানে এ পর্যন্ত দুটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এবার তৃতীয় প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গ্যাস চুরির লোমহর্ষক তথ্য। যার নেপথ্যে রয়েছেন ডেপুটি ম্যানেজারের (পিআরও) বেলাল উদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম-১০ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের প্রভাবশালী কুখ্যাত সন্ত্রাসী মহিউদ্দিন বাচ্চুর ছোট ভাই।

যার অস্ত্রের মুখে ২০১০ সালে প্রকাশিত নিয়োগ সার্কুলারে কোনরকম পরীক্ষা-ভাইভা ছাড়াই ২০১১ সালে নিয়মবহির্ভুতভাবে বেলাল উদ্দিনকে সহকারি ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিতে বাধ্য হন তৎকালীন এমডি। শুধু বেলাল নয়, এ সময় আওয়ামী লীগের আরেক দূর্নীতিবাজ মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সহযোগীতায় মহিউদ্দিন বাচ্চুর গুলি করে মারার হুমকির মুখে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৫৭ জন নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিতে বাধ্য হন তৎকালীন এমডি।

আর নিয়োগ পেয়ে প্রতিষ্ঠানের অঘোষিত এমডি বনে যান বেলাল উদ্দিন। শুরু হয় নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট। যার সূত্র ধরে এবার মিলেছে গ্যাস চুরির কারসাজির তথ্য। অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ করে জানা যায় লোমহর্ষক এসব তথ্য।

কেস স্টাডি-১
সূত্রের তথ্যমতে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের অক্সিজেন জালালাবাদ এলাকায় ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার নামে একটি কারখানায় ধরা পড়ে গ্যাস চুরির জালিয়াতি। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর আগে গ্যাস সংযোগে ৯৪ কেজি বয়লার লাগানোর অনুমতি পান কেজিডিএিসএল থেকে। কাজ পান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শাওন এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু সেখানে গোপন চুক্তির মাধ্যমে লাগানো হয় ২৫০ কেজির বয়লার। যা ব্যবহারে আড়াইগুণ বেশি গ্যাস চুরি হয়।

নীটওয়্যার কারখানার সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৫০ কেজির বয়লার বসিয়ে দ্বিগুণ অর্থ হাতিয়ে নেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আর প্রতিমাসে হাতিয়ে নেন প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া গ্যাস বিলের অর্ধেক টাকা। যার সাথে যোগসাজশে ছিল প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম। আর এই কারসাজির মুলে ছিল কেজিডিসিএলের তৎকালীন জিএম বেলাল উদ্দিন। তবে গত আগস্ট মাসে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি ধরা পড়লে কারখানাটির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় কেজিডিসিএল। পরে ৯৪ কেজি বয়লারের স্থলে ফের ১০০ কেজির বয়লার স্থাপন করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার কারখানার মালিক মো. ফয়সাল বলেন, বয়লারের ধারণক্ষমতা বেশি হওয়ার কারণে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জরিমানা দিয়ে সমস্যাটি সমাধান করেছি। এ নিয়ে আর কোন কথা বলতে চাই না। বললে সমস্যা বাড়বে।

কেস স্টাডি-২
সূত্র আরও জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে শাওন এন্টারপ্রাইজের নামে পতেঙ্গায় বিপিসি নিয়ন্ত্রণাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারীর সি এম এস আভ্যন্তরীণ গ্যাস লাইনের জরুরী রক্ষনাবেক্ষণ কাজে আর এফ কিউর মাধ্যমে ১৮ লক্ষ টাকার কার্যাদেশ বিনা টেন্ডারে দেওয়া হয়। অথচ এ পদ্ধতিতে ৬ লাখ টাকার বেশি কার্যাদেশ দেওয়ার নিয়মই নেই।

এর মধ্যে রয়েছে আরও বড় ধরণের কারচুপি ও সরকারি অর্থ লোপাটের ঘটনা। সেটি হলো কার্যাদেশ বাস্তবায়ন শেষে ইস্টার্ন রিফাইনারী থেকে নেওয়া সমাপ্তি প্রত্যয়নে ৮২ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়। যা পুরো তুলে আত্নসাৎ করা হয়েছে। আর এই কারচুপিতে জড়িত ইস্টার্ন রিফাইনারীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কেজিডিসিএলের বর্তমান ডিজিএম বেলাল উদ্দিন চক্র।

গ্যাস চুরির রকমফের :
শুধু ইস্টার্ন রিফাইনারী বা ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার কারখানা নয়, নগরীর বিভিন্ন শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতেও নতুন গ্যাস সংযোগে এ ধরণের কারচুপি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চোর চক্র। লুট করেছে রাষ্ট্রের সম্পদ। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

অর্থ লুটের পথ সুগম করতে বেলাল উদ্দিন আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনকে শুধু প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়নি, ঠিকাদারি লাইসেন্সও দিয়েছেন দলের পছন্দের লোক দেখে। এতেও টাকা হাতিয়ে নিতে ভুল করেননি বেলাল। আর পছন্দের ঠিকাদার ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বেলাল উদ্দিনের মর্জি মোতাবেক কাজ করেন। নেন লাভের অর্ধেক টাকা। এতে টেন্ডার বঞ্চিত হন প্রকৃত ঠিকাদাররা। প্রতারণার শিকার হন সাধারণ গ্রাহকরা। আর গ্রাহক যদি বিএনপি-জামায়াতের হয় তাহলে তো কথাই নেই। টুনকো অজুহাতে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ৪-৫ লাখ টাকা আদায় নতুবা অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয়।

কর্মচারিদের ভাষ্য, প্রায় প্রতিদিনই শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে গ্যাস চুরির ঘটনায় বা সঠিক সময়ে বিল পরিশোধ না করায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। যেগুলো পিআরও বেলাল উদ্দিনের পরামর্শ মতে ভুক্তভোগী গ্রাহকের সাথে কথা বলে গোপন চুক্তিতে পুনরায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়া হয়। যা তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে জোর দাবি সংশ্লিষ্টদের।

সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, চট্টগ্রামে হাজার হাজার শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংযোগ রয়েছে। আর এই গ্যাস সংযোগ নিতে চলে নানা কারচুপি ও অনিয়ম। যার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু গ্যাস সংযোগ দিয়ে থেমে নেই। প্রতি সংযোগকে যেন অবৈধ আয়ের মেশিন বানানো হয়েছে।

যেমন কোন শিল্প কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে গ্যাস ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বয়লার বসাতে হয়। কিন্তু গ্যাস সংযোগের সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তার চেয়ে দ্বিগুণ বয়লার বসিয়ে দেয়। এতে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করলেও সরকার পায় অনুমোদিত বয়লারের মাত্রার বিল। বাকি বিল ঢুকে ঠিকাদার থেকে বিল শাখা, ডিজিএম মার্কেটিং ও ডিজিএম ভিজিলেন্স কর্মকর্তার পকেটে। আর সব টাকা বিলি হয় পিআরও বেলাল উদ্দিনের হাত দিয়ে। কারণ পদাধিকার বলে না হলেও অস্ত্র ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে কেজিডিসিএলের অঘোষিত এমডি এই বেলাল উদ্দিন। নামে-বেনামে তার একাধিক ঠিকাদারি লাইসেন্সও রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমডির পছন্দের লোক বেলাল উদ্দিন
বেলাল উদ্দিন ছাড়া প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সালাহ উদ্দিন কোন কথা বলেন না। কোন সাংবাদিক কোন বিষয়ে কথা বলতে গেলে এমডি সালাহ উদ্দিন কৌশলে এড়িয়ে যান, না হয় বেলাল উদ্দিনের কাছে পাঠিয়ে দেন। এমনকি ফোন করলেও তিনি লালিত-পালিত সাংবাদিক ছাড়া অন্য কারও ফোন ধরেন না।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) গ্যাস চুরির বিষয়ে কথা বলতে বিপণন উত্তর ও দক্ষিণের দুই কর্মকর্তার মুখেও উঠে আসে তথ্যের সত্যতা। বিপনন-উত্তরের ব্যবস্থাপক মো. সোলায়মান বলেন, সরবরাহ আর রিকভারির মধ্যে পার্থক্য আছে এটা ঠিক, গ্যাসও চুরি হচ্ছে কিন্তু এ বিষয়ে কোন তথ্য দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই। আপনি জনসংযোগ ও সমন্বয়ক ডিপার্টমেন্টের ডিজিএম বেলাল উদ্দিনের সাথে কথা বলুন। মিডিয়ার সাথে কথা বলার ক্ষমতা একমাত্র ওনাকে দেয়া হয়েছে। একই কথা বলেন বিপণন-দক্ষিণের সহকারি ব্যবস্থাপক মো. আজমও। তিনিও ডিজিএম, পিআরও‘র সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বেলাল উদ্দিনের মাধ্যমে অবৈধ আয়ের কোটি টাকা প্রতিমাসে কেজিডিসিএলের বর্তমান এমডি সালাহ উদ্দিনের পকেটের ঢুকে। ফলে মুখে কুলুপ দিয়ে রাখেন এমডি সালাহ উদ্দিন। প্রতিষ্ঠানের সবাই জানে বেলাল উদ্দিন এমডি সালাহ উদ্দিনের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন। ফলে ভয়ে থাকেন প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারি।

যার প্রমাণ দিতে কেজিডিসিএল থেকে প্রকাশিত একটি সাময়িকী প্রকাশের ঘটনা সামনে নিয়ে আসেন ক্ষিপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। সেটা হলো, সর্বশেষ সাময়িকী প্রকাশের জন্য বিজ্ঞাপণের কথা বলে ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন বেলাল উদ্দিন। তম্মধ্যে খোদ পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যানের কাছে বিজ্ঞাপনের জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করেন বেলাল। এত টাকা না দেওয়ায় বেলাল উদ্দিন পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যানের সাথেও উদ্যত্তপূর্ণ আচরণ করেন।

ফলে পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিনকে বেয়াদব আখ্যা দিয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কেজিডিসিএলের এমডি বরাবরে চিঠি লিখেন। কিন্তু এমডি সালাহ উদ্দিন কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বেলাল উদ্দিনের বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানিয়ে উত্তরপত্র প্রেরণ করেন। শুধু তাই নয় আওয়ামী ক্ষমতাবলে বাড়ির আধা কিলোমিটারের মধ্যে শুরু থেকে চাকরি করে যাচ্ছেন কেজিডিসিএলে। যা সার্ভিস রুলে সম্পূর্ণ অবৈধ। রুল অনুযায়ী সরকারি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারি নিজ জেলার ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে পোস্টিং বা বদলি হতে পারবেন না।

ভুক্তভোগী কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, বেলাল উদ্দিন এমন একজন লোক। যার নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় কেজিডিসিএলের অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে চর-থাপ্পড় খেয়েছেন। লাঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই। তার সাথে ৫৭ জন কর্মকর্তা সহকারি ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ পেলেও এদের কেউ এখনও ডিজিএম হয়নি। সহকারি থেকে কোনমতে জিএম হয়েছেন। এক্ষেত্রেও কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয়েছে। ঘুষের অংশ থেকে নিজেই ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ডিজিএম পদে পদোন্নতি নিয়েছেন বেলাল। আর সাংবাদিকদের অনুসন্ধান থেকে সবরকমের অনিয়ম ও দূর্নীতি আড়াল করতে তাকে জনসংযোগ ও সমন্বয়ক ডিপার্টমেন্টের (পিআরও) দায়িত্ব দিয়েছেন বর্তমান এমডি।

এ বিষয়ে জানতে কেজিডিসিএলের এমডি সালাহ উদ্দিনের অফিসিয়াল ল্যান্ড ও মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাতে কথা বলতে চাইলে এমডির পিএ সুলতান মাহমুদ পিআরও বেলাল উদ্দিনের সাথে কথা বলতে বলেন। কিন্তু গিয়ে দেখা যায় বেলাল উদ্দিন কার্যালয়ে নেই। তিনি দুপুরের খাবার খেতে গেছেন বলে জানান ওই দপ্তরের কর্মচারিরা। তখন বিকেল সাড়ে ৩ টা।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনসংযোগ ও সমন্বয়ক ডিপার্টমেন্টের সহকারি কুতুব উদ্দিন বলেন, প্রতিষ্ঠানে গ্যাস চুরি থাকলেও আমার স্যারের সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে পারবেন না। আর প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর একটি সাময়িকী বের হয় ঠিক আছে। সেখানে অফিসিয়ালি কারও কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়া হয় না। কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ব্যক্তিগত খরচে এটি বের হয়। সেই সূত্রে পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যানের স্যারের কাছে বিজ্ঞাপণ বাবদ সহযোগীতা চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি কি করেছেন বা স্যারের সাথে কি হয়েছে আমি জানি না।

ঈশান/মখ/বেবি

(বিঃ দ্রঃ কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের ডিজিএম (পিআরও) বেলাল উদ্দিনের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন-৩ প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদন-৪ পড়তে চোখ রাখুন দৈনিক ঈশানের প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে।)