রবিবার- ২০ এপ্রিল, ২০২৫

মংডু থেকে ফিরে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল

নাগরিকত্ব, ভিটেমাটি পেলেই ফিরে যাবেন রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারের রাখাইনের মংডুতে প্রত্যাবাসনের পরিবেশ দেখে কক্সবাজারের টেকনাফে ফিরে এসেছেন ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল ও বাংলাদেশের সাত কর্মকর্তা। শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যা ৬টায় টেকনাফের ট্রানজিট ঘাটে এসে পৌঁছান তারা।

মংডু ঘুরে আসা রোহিঙ্গারা টেকনাফ ট্রানজিট ঘাটে সাংবাদিকদের জানান, তাদের নাগরিকত্ব, ভিটেমাটি ও চলাফেরার স্বাধীনতা দিলে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন। মংডু শহরের পরিবেশ একটু ভালো হলেও গ্রামের পরিবেশে তারা সন্তুষ্ট নন। রোহিঙ্গারা কোনও ক্যাম্পে নয়, নিজেদের ভিটে বাড়িতে ফিরে যেতে চান।

তবে তাদের সঙ্গে থাকা সরকারি প্রতিনিধি দলের নেতা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রাখাইনের মংডু শহর ও গ্রামের পরিবেশ এখন অনেক ভালো। মংডু শহরে অধিকাংশ রোহিঙ্গা কাজকর্ম করছে এবং অবাধে ঘুরছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। একদিনে তা সমাধান করা সম্ভব নয়। তাদের টেকসই এবং মর্যাদার ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন করতে চায় বাংলাদেশ।

রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পরিস্থিতি দেখতে ২৭ সদস্যের এই প্রতিনিধি দল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ ট্রানজিট ঘাট দিয়ে নাফ নদ পার হয়ে মংডু যান। এই দলে ২০ জন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের সাত সরকারি কর্মকর্তা। নেতৃত্ব দিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। দলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। মিয়ানমারে যাওয়ার জন্য টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা, নয়াপাড়া ও জাদিমুড়া এলাকায় অবস্থিত ২৪, ২৬ ও ২৭ নাম্বার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত ২০ রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাকে বাছাই করা হয়।

টেকনাফে ট্রানজিট ঘাটে পৌঁছে প্রতিনিধি দল মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের। এ সময় রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ সুফিয়ান বলেন, আমার ভিটায় একটা ক্যাম্প করেছে। আমরা এই ক্যাম্পে নয়, নিজের ভিটেমাটিতে ফিরতে চাই। আমাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।

এর আগে, ১৫ মার্চ টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশে আসেন মিয়ানমার সরকারের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের দেওয়া তালিকা যাচাই-বাছাই করেন।

প্রতিনিধি দলটি টানা সাত দিন টেকনাফের স্থলবন্দর রেস্ট হাউজে অবস্থান করে ১৪৭ রোহিঙ্গা পরিবারের মোট ৪৮৬ জনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। আর তাদের দেওয়া বক্তব্য রেকর্ড করেন। গত ২২ মার্চ সকালে প্রতিনিধি দলটি নাফ নদী পার হয়ে মিয়ানমারে ফিরে যান।

তখন মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যাদের প্রত্যাবাসন করা হবে সেই সব রোহিঙ্গা যাতে আগে থেকে রাখাইনের সার্বিক পরিবেশ স্বচক্ষে দেখে আসতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল শুক্রবার রাখাইন যান।

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page