চট্টগ্রাম মহানগরীর অলিগলিতে ভাসমান মেয়ে পথশিশু পেলেই নিয়ে যান শ্রাবন্তী। তাও আবার ১২ বছরের বেশি বয়সি। কেউ ঘুণাক্ষরেই বুঝতে পারেনি এর কম বয়সি মেয়ে শিশু নেয় না কেন শ্রাবন্তী। আবার ছেলে পথশিশুদেরও তো নেয় না। বরং সবাই জানে শ্রাবন্তীর ডেরা মানেই পথশিশুর ডেরা।
কিন্তু সেই পথশিশুর ডেরাতেই মিলল মিনি পতিতালয়। হারিয়ে যাওয়া এক শিশুর খোঁজ নিতে গিয়ে এই পতিতালয়ের সন্ধান পেল বন্দর থানা পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় আরও চার মেয়ে পথশিশুকে। তাদের একজনের বয়স ১৩ বছর, অন্য তিনজনের ১৪ বছর। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শ্রাবন্তীর সঙ্গে আটক করা হয় তার চার সহযোগীকে।
এরা হলো-গাজীপুর শ্রীপুরের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে মো. আমির হোসেন (৩৫), ভোলা সদরের সিধু মাঝির ছেলে মো. জামাল (৫২), একই এলাকার ইয়াছিন ব্যাপারির মেয়ে মিতু আক্তার কাজল (১৯) এবং বশির আহম্মদের ছেলে আবদুল জলিল (৫৫)। আটকদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বন্দর থানার ওসি সঞ্জয় সিনহা মঙ্গলবার বিকালে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত সোমবার রাতে এক শিশুর সন্ধানে তার অভিভাবকরা আসে আমাদের থানায়। আমরা সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারি শিশুটি শ্রাবন্তীর ডেরাতেই আছে। কিন্তু আমরা সেই শিশুকে উদ্ধার করতে গিয়ে সন্ধান পাই শ্রাবন্তীর মিনি পতিতালয়ের। ভিকটিম ওই শিশুসহ চারটি শিশুকে আমরা উদ্ধার করি।
ওসি জানান, শ্রাবন্তী (৩৪) কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার ভাগুরাপাড়ার কোরবান আলীর মেয়ে। চট্টগ্রাম নগরীতে সে হিজড়া শ্রাবন্তী নামে পরিচিত। বসবাস বন্দর থানার এছাক ডিপো সংলগ্ন টোল প্লাজা বাইপাস রোডের পাশে, যেখানে সে গড়ে তোলে নিজের ডেরা। সেখানে ১৩-১৪ বছরের মেয়ে পথশিশুদের লালন-পালনের কথা বলে নিয়ে যায়।
বাবা-মা হারা পথশিশু অথবা একেবারেই অনাথ মেয়ে শিশুরা একটা নতুন জীবনের আশায় শ্রাবন্তীর সঙ্গে যায়। কিন্তু সুখের বদলে তাদের জীবনে নেমে আসে বিভীষিকা। অপ্রাপ্ত বয়সেই শিকার হতে হয় ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের।
You cannot copy content of this page