সোমবার- ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

পাহাড় কেটে চসিকের আওয়ামীপন্থী দুই কাউন্সিলরের হাউজিং সোসাইটি

পাহাড় কেটে চসিকের আওয়ামীপন্থী দুই কাউন্সিলরের হাউজিং সোসাইটি

ট্টগ্রাম মহানগরীর পার্শ্ববর্তী জঙ্গল লতিফপুরে পাহাড় কেটে হাউজিং সোসাইটির প্লট বানিয়েছে সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগপন্থী সাবেক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন মঞ্জু ও জহুরুল ইসলাম জসিম। অভিযানে এই হাউজিং সোসাইটি গুড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিপ্তর।

এ ঘটনায় দুই কাউন্সিলরসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে ৪০ থেকে ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা হয়েছে মামলা। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগরের আকবর শাহ থানায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার আশরাফ উদ্দিন বাদি হয়ে এ মামলা করেন।

মামলার আসামি নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের আহবায়ক। তিনি চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্যও। অন্যদিকে জহুরুল আলম জসিম ৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বরখাস্ত কাউন্সিলর এবং একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক।

আরও পড়ুন :  হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল চট্টগ্রাম

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, চট্টগ্রাম নগরীর পার্শ্ববর্তী সীতাকুণ্ড উপজেলার আকবর শাহ থানার মিরপুর মালিক কল্যাণ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৫৫) ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন (৫৫)। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরের আকবরশাহ থানার জঙ্গল লতিফপুরের সলিমপুর ইউনিয়নের মিরপুর মালিক কল্যাণ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড নামে পাহাড়ি এলাকায় অবৈধভাবে এই আবাসিক এলাকা গড়েছেন। আসামিরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশ অমান্য করে পরিবেশের ছাড়পত্র না নিয়ে এ সোসাইটির নামে আবাসন প্রকল্প স্থাপন করেন। এতে অবৈধভাবে চার থেকে পাঁচ একর পাহাড় কেটে ওই জমিতে ২৫০ টি প্লট করে বিক্রি করে আসছেন।

আরও পড়ুন :  ট্রেনে ইয়াবা পাচারে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি, শাস্তি শুধুই বদলি!

এর আগে বুধবার সারাদিন ওই এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ। এ সময় সদর দপ্তর সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

ওই সময় পাহাড় কাটতে দেখে সালমা খানম (৪০) নামে একজনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে পাহাড় কাটার কাজে নিয়োজিত ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক পালিয়ে যায়। অভিযান পরিচালনা করা ম্যাজিস্ট্রেট কেটে ফেলা ওই পাহাড়ি জমির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।

আরও পড়ুন :  ভারতের পেঁয়াজেও ইতিবাচক প্রভাব নেই চট্টগ্রামে

সূত্র জানায়, পাহাড় কাটা, জলাশয় ভরাটের দায়ে সাবেক কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা ও জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। কিশোর গ্যাং, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আকবরশাহ, পাহাড়তলী, খুলশীসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অন্তত ৪০টি মামলা রয়েছে।

সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই তার বিরুদ্ধে অন্তত ৩০টি মামলা হয়। ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা অ্যাড. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মীদের উপর হামলার মামলায় চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরখাস্ত করে। গত ১২ আগস্ট তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে মন্ত্রণালয়।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page