মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিয়ন্ত্রণের পর এখন বাংলাদেশের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন করে নতুন রাষ্ট্র গঠণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বান্দরবানের সীমান্ত এলাকাজুড়ে আরাকান আর্মির সদস্যদের চলাচল বহুগুণ বেড়েছে এবং তারা স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে দলে ভিড়িয়ে শক্তি সঞ্চয় করছে, যার পেছনে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে, প্রভাবশালী দুটি দেশ রাখাইন ও বাংলাদেশের পার্বত্য সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নিতে আরাকান আর্মিকে সহযোগিতা করছে, যা এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি ‘ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের’ ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, যাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বান্দরবানের বিভিন্ন সীমান্তপথ ব্যবহার করে অবাধে যাতায়াত করছে এবং স্থানীয় উপজাতি নারীদের বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাসের চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি আরাকান আর্মির নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল লাজেককে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে মারমা সম্প্রদায়ের তরুণদের দলে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করতে দেখা গেছে। সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অনেককে মিয়ানমারে নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আবার বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অস্ত্র ও মাদক পাচার এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নষ্ট করা এই গোষ্ঠীর মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। গত ছয় মাসে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে অস্ত্রের মুখে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে আরাকান আর্মি।
গত ১১ আগস্ট রনি তঞ্চঙ্গ্যা নামে আরাকান আর্মির এক সদস্য অস্ত্রসহ বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে। তার ভাষ্যমতে, আরাকান আর্মি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় মাইন স্থাপন করেছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অনেক এলাকায় বাংলাদেশি মোবাইল নেটওয়ার্ক (রবি) ব্যবহার করে আরাকান আর্মির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে।
You cannot copy content of this page