
বাংলাদেশের খুলনা-দর্শনা, পার্বতীপুর-কাউনিয়া এবং বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল ট্রানজিট প্রকল্পে নাই হয়ে গেলো ভারত। এ নিয়ে ভারতের কয়েকটি মিডিয়া ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ সরকার কান্নাকাটি করছে। ‘দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে পড়েছে’।
কিন্তু বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকল্পগুলো আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। বিকল্প অর্থায়ন ও পরিকল্পনার মাধ্যমে রেল যোগাযোগ উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপও এখনো জোরালো এবং উভয় পক্ষই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী।
তবে ভারতের কিছু মিডিয়া এসব খবর প্রচারের মাধ্যমে দু‘দেশের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে। যা বাস্তব পরিস্থিতি থেকে অনেক দূরে। সুতরাং, প্রকল্প থেকে ভারতের আপাতত সরে দাঁড়ানো বিষয়টি সত্য হলেও, ‘বাংলাদেশ সরকার কান্নাকাটি করছে’ বা ‘সম্পর্ক তলানিতে পড়েছে’ এরকম দাবি ভারতের মিডিয়ার প্রোপাগান্ডামূলক প্রচারণা মাত্র।
ভারতীয় একটি অনলাইন গণমাধ্যম indiahood প্রচার করা হয় বাংলাদেশে ৩টি রেল ট্রানজিট প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়াল ভারত! কান্নাকাটি শুরু ওপারে(বাংলাদেশ)। আওয়ামী লিগের সরকার নেই। ফলত, খুব স্বাভাবিকভাবেই হাসিনার পতনের পরই ওপারের সাথে সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে ভারতের। যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রেই। বাংলাদেশ যেমন আচরণ করছে এবার থেকে তার ঠিক যোগ্য আচরণ ফিরিয়ে দিচ্ছে ভারতও।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে দাবি করছে, ওপার বাংলার তিনটি রেলপথ উন্নয়ন প্রকল্প অর্থাৎ ট্রানজিট করিডোরের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ওপারের সঙ্গী হয়েছিল ভারত। মূলত তিন ট্রানজিট প্রকল্পে ঢাকার সাথে যুক্ত হয়েছিল দিল্লি। তবে ওই প্রতিবেদন বলছে, এবার বাংলাদেশের সাথে তিন ট্রানজিট প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে ভারত।
ওই প্রতিবেদন মারফত খবর, বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাকি জানিয়েছেন, গত মার্চ মাসের ৫-৬ তারিখ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। আর সেই সভাতেই মূলত ওপার বাংলার তিনটি ট্রানজিট রেল প্রকল্পে অর্থায়নে কোনও আগ্রহ দেখায়নি ভারতের প্রতিনিধিরা।
জানা যাচ্ছে, ভারতের তরফে আশানুরূপ বার্তা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নাকি তিন ট্রানজিট প্রকল্পের খুলনা থেকে দর্শনা ও পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া প্রকল্প আপাতত স্থগিত করে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে সূত্রের খবর, দুই প্রকল্প স্থগিত করে বিকল্প অর্থায়নের মাধ্যমে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে ওপার বাংলার রেল মন্ত্রক। যদিও, ভারতের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ওই রেল প্রকল্পগুলির ঋণ চুক্তি বাতিল করা হয়নি বলেই খবর। মূলত সেই কারণেই, এখনও আশার আলো দেখছে ওপার বাংলার রেল মন্ত্রক।
বাংলাদেশ রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খুলনা-দর্শনা রেলপথ উন্নয়ন প্রকল্পটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি করা। এছাড়াও ডবল লাইনের রেলপথ তৈরি করে মংলা বন্দরের সঙ্গে ভারতের উন্নতি সাধন ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং নেপাল ও ভুটান পর্যন্ত পণ্য সরবরাহের পথ তৈরি করা।
তবে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের মাধ্যমে তিন রেল প্রকল্পে অর্থায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের কোনও দিশা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। বলা বাহুল্য, ভারতের হাত ধরে ২০২৫ সালের মধ্যে তিনটি ট্রানজিট প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেছিল সবচেয়ে কাছের পড়শি!
তবে বাংলাদেশের রেলওয়ে কর্মকর্তারা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা জানান এটা ভারতের নিত্যদিনের কাজ তার মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুজব ছড়ায় যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। এবং দেশের সাধারণ মানুষের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। যা কোন ভাবেই করা উচিত নয়।