শুক্রবার- ২২ আগস্ট, ২০২৫

‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল, মালিকপক্ষের প্রতিবাদ

সাঈদ হোসেন চৌধুরীর ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল

দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সই করা অফিস আদেশে পত্রিকাটির ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করা হয়েছে।

পত্রিকাটির সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগের আবেদন করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়।

অফিস আদেশ অনুযায়ী, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি প্রকাশের জন্য যে অনুমোদিত প্রেস রয়েছে সেখান থেকে ছাপা হচ্ছে না, কিন্তু প্রিন্টার্স লাইনে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে মর্মে শফিক রেহমান অভিযোগ জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার পর এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পত্রিকাটি মুদ্রণের ডিক্লেয়ারেশন বা ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয়েছে।

আদেশ অনুযায়ী, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকা প্রকাশে ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন, ১৯৭৩ এর ১০ ধারার লঙ্ঘন হয়েছে। এ কারণে ‘দৈনিক যায়যায়দিন’ পত্রিকার প্রকাশক ও মুদ্রাকর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর নামে যে ঘোষণাপত্র ছিল তা বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন :  কাজ করছেন রেলকর্মীরা, টাকা লুটছে ডিএন-১ প্রকৌশলী আবু রাফি!

এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, শফিক রেহমানের ঠুনকো অজুহাতে যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়। এ ঘটনা বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের দুঃশাসনকেও হার মানায়।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। অবৈধভাবে দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল এবং ঠুনকো অজুহাতে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে বর্তমান মালিকপক্ষ ও সাংবাদিকরা।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে অবৈধভাবে প্রধান কার্যালয় ও ছাপাখানা দখল করেছে একটি কু-চক্রী মহল। তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বর্তমান মালিক সাঈদ হোসেন চৌধুরীর কাছ থেকে যায়যায়দিন ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আমরা বর্ষীয়ান এই সাংবাদিকের সম্মানের কথা ভেবে নীরবে বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কু-চক্রী মহলটি আইন-আদালতসহ সর্বত্র প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এবং সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বলে চালিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রাম বন্দরে দুই কোম্পানির ১৩৭ কোটির জালিয়াতি

আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব, একটি মিডিয়া হাউজ কোন শক্তির জোরে দখল করা হয়েছে তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে।

তিনি বলেন, দুঃখজনক হলো, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলস্থ যায়যায়দিন কার্যালয় ও প্রেস বেদখল হওয়ার পর আমরা বিধি মোতাবেক ডিসি অফিসকে অবহিত করে অন্য প্রেস থেকে পত্রিকা ছাপানোর ব্যবস্থা করি। পরপর দুটি প্রেস পরিবর্তনের বিষয়টিও যথারীতি ডিসি অফিসকে জানানো হয়। কিন্তু ডিসি অফিস শফিক রেহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঠুনকো অজুহাতে যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে। এ ঘটনা বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের দুঃশাসনকেও হার মানায়।

আরও পড়ুন :  জনবল সংকটে ধুঁকছে চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিস

এর আগে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় আমাদের জানায়, লাভ রোডে অবস্থিত ছাপাখানা ও যায়যায়দিন পত্রিকার প্রধান কার্যালয় আইনগতভাবে শফিক রেহমানের। কিন্তু আইনগত কোন প্রক্রিয়ায় তিনি এসব প্রাপ্ত হয়েছেন তার কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। এ ঘটনার পর সাঈদ হোসেন চৌধুরী হাইকোর্টে রিট দাখিল করেছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আদালত যায়যায়দিন পত্রিকার সবকিছুই সাঈদ হোসেন চৌধুরীর পক্ষে থাকবে বলে তিন মাসের ‘স্থিতাবস্থা’ দিয়েছেন। তারপরেও সবকিছু দখল হয়ে গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য সব উপদেষ্টারা বারবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলছেন, কোনো অজুহাতে একটি গণমাধ্যমও যেন বন্ধ না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করছেন। সেখানে যায়যায়দিন আইনগতভাবে নিয়মিত প্রকাশিত হওয়ার পরও কোন শক্তির ইশারায় এর ডিক্লারেশন বাতিল করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাহলে কি আমরা ধরে নিতে পারি সরকারের ওপর সরকার রয়েছে।

ঈশান/মখ/মসু

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page