Skip to content

বুধবার- ৪ জুন, ২০২৫

সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত ৫২ বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর

সিসি ভেদে এখন ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে

সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত ৫২ বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর

ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৫২টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে গেছে চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দরে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট মডেলের ৩ থেকে ৪ হাজার সিসির এসব গাড়ির বেশিরভাগই জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে। সিসি ভেদে এখন এসব গাড়ির ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। আর এ নিয়ে চেরম বিপাকে পড়েছেন দুই বন্দর কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে এমন তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালনা সদস্য (পরিবহণ) এনামুল করিম। তিনি জানান, জাতীয় সংসদের সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করতে পারেন। সে হিসেবে গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে ৫২টি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করা হয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। ফলে শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল হয়ে যায়।

কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়নি। তবে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল হওয়ায় এসব গাড়ি খালাস করতে হলে সিসি ভেদে ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হতে পারে। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব গাড়ি খালাস নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, সংসদ এখন বহাল নাই, তাই আইন অনুযায়ী, স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করে এসব গাড়ি খালাস নিতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা গাড়িগুলো আমদানি করেছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও নেত্রকোনার সাবেক এমপি সাজ্জাদুল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এস এ কে একরামুজ্জামান, ফয়জুর রহমান, সিরাজগঞ্জের চয়ন ইসলাম ও জান্নাত আরা হেনরি, নাটোরের আবুল কালাম ও সিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারী, বগুড়ার মজিবুর রহমান মঞ্জু ও রেজাউল করিম তানসেন, টাঙ্গাইলের অনুপম শাহজাহান জয়, হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সুনামগঞ্জের রনজিৎ সরকার ও ড. সাদিক, গাইবান্ধার আবুল কালাম আজাদ, ঝিনাইদহের মো. নাসের শাহরিয়ার জাহিদি, লক্ষ্মীপুরের মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং দিনাজপুরের মুহাম্মদ জাকারিয়া। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যশোরের নওয়াব আলী জোয়ার্দার।

এ ছাড়া সাবেক এমপিদের মধ্যে গাড়ি আমদানি করেছেন আব্দুল মোতালেব, মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, শাহ সরওয়ার কবির, এবিএম আনিসুজ্জামান, সাদ্দাম হোসাইন পাভেল, এস এম আল মামুন, আক্তারুজ্জামান, মো. সাইফুল ইসলাম, এস এম কামাল হোসেন, মাহমুদ হাসান রিপন, মুজিবুর রহমান, এস এম আতাউল হক, মাহমুদুল হক সায়েম, মো. মতিউর রহমান, মো. তৌহিদুজ্জামান, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ ও সিদ্দিকুল আলম।

এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনে সদস্যদের মধ্যে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছেন তারানা হালিম, সানজিদা খানম, নাসিমা জামান ববি, খালেদা বাহার বিউটি, রুনু রেজা ও সাহিদা তারেক দিপ্তি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সরকার সংসদ সদস্যদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা চালু করে। ১৯৮৮ সালের ২৪ মে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত অর্থ বছরে শুল্কমুক্ত গাড়িগুলো আমদানি করা হয়। যা চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে রাখা হয়েছে।

ঈশান/খম/সুম 

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page