শুক্রবার- ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

হাছান মাহমুদের ৩৮ কোটি টাকা আত্নসাতের চেষ্টার সেই প্রকল্পের ছাড়পত্র বাতিল

আবাসনের নামে রাঙ্গুনিয়ায় সংরক্ষিত পাহাড় বিক্রির চেষ্টায় ছিলেন হাছান মাহমুদ

ট্টগ্রাম প্রকৌশল এন্ড প্রযুক্তি বিশ্বববিদ্যালয়ের পাশে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা এলাকার সংরক্ষিত বনের পাহাড়ে নেওয়া জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) নেওয়া ‘সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিল করেছে পরিবেশ অধিদফতর।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (পরিবেশগত ছাড়পত্র) মাসুদ ইকবাল মো. শামীম মঙ্গলবার (২০ আগস্ট)  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবার (১৯ আগস্ট) অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নেওয়া ‘সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি এ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

এর আগে ১৩ আগস্ট জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ পাহাড় ও জলাশয় বেষ্টিত উল্লেখিত এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে চিঠি দিয়েছে। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সদস্য বিজয় কুমার মন্ডল এ চিঠি দেন। চিঠিতে প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ৯ একর জায়গায় পাহাড়, টিলা ও জলাভূমি ছাড়া সমতল নেই বলে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন :  ধরপাকড় শুরু, পুরুষশূন্য জোবরা গ্রাম

গত ৬ জুন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শর্ত সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদন করেন। এর আগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদের আধা সরকারি সুপারিশের (ডিও লেটার) পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল।

অভিযোগ উঠে, রাঙ্গুনিয়া আসনের এমপি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রকল্পের আওতায় ১৯৫টি প্লট বিক্রির নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যে কাজে জড়িত ছিল তার ভাই খালেদ মাহমুদ, এরশাদ মাহমুদ, পিএ এমরুল করিম রাশেদ, এনায়েতুর রহিম, সাংবাদিক জিগারুল ইসলাম জিগার, পৌর মেয়র শাহজাহান সিকদারসহ আরও অনেকে।

আরও পড়ুন :  আমানত থেকে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক!

জাগৃক সূত্র জানায়, প্রকল্প এলাকার ৭০ শতাংশ পাহাড় ও ৩০ শতাংশ জলাধার হওয়ায় বিভিন্ন সংস্থার আপত্তিতে প্রকল্পটি প্রথমে বাতিল করা হয়। তবে হাছান মাহমুদের চাপে আগের মতামত বাদ দিয়ে নতুন করে প্রকল্প অনুমোদন করানো হয়। ২০২০ সালের মার্চে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্পে ১৬ দশমিক ১৯ একর জমি ধরা হলেও ১৪ দশমিক ১৯ একরে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৪১ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয় ভূমি অধিগ্রহণে। অথচ এই ভুমি ছিল সংরক্ষিণ বনভুমি। মূলত এই বনভুমি অধিগ্রহণের নামে ওই টাকা আত্নসাৎ করতে চেয়েছিল হাছান মাহমুদ।

আরও পড়ুন :  আগস্টে লুট হওয়া অস্ত্র শনাক্ত করা যাচ্ছে না

সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নেজামুল হক মজুমদার বলেন, ‘প্রকল্পটি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইছাখালী এলাকায় বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এ প্রকল্পে আমাদের মতামত ছিল না। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এ প্রকল্প নেওয়া হয়। আবার আমাদের সুপারিশে প্রকল্পটি বাতিল করা হচ্ছে।’

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন