চট্টগ্রামের কওমি অধ্যুষিত দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারি মাদ্রাসার হোস্টেলে বাইবেল পাওয়ার অভিযোগে মাহমদুল হাসান নামে হিদায়াতুননাহু জামাতের এক শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেছে। মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসও দেয়া হয়েছে। তবে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভর্তি জালিয়াতি ও জামিয়ার অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার দায়ে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। বহিস্কৃত শিক্ষার্থী রাঙামাটি জেলার বেতবুনিয়া এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে।
এ বিষয়ে অনেক চেষ্টা করেও মাহমুদুল হাসানের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মাদ্রাসা ভর্তি হওয়ার পর থেকে একের পর এক অনিয়ম করে আসছে। যা বিভিন্ন সময় মাদরাসা প্রশাসন ক্ষমা করে দিতো! বিগত কয়েকদিন আগে মাদ্রসার বাহিরে বহিরাগত এক ছেলের সাথে সে স¤পর্ক তৈরি করে তার বাসায় যায়! বাসায় গিয়ে তার অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করে তার কাছে! পরে সে তার বাসায় সে রাত থাকতে দিলে অর্ধ রাতে বাসা থেকে বের হয়ে চলে আসে!
পরবর্তীতে ওই বাসার মালিক তথা হান্নান চৌধুরিকে ফোন দিয়ে সে বলে আপনি আমার সাথে বাজে (বলৎকার) কাজ করছেন। তাই রাতে বাসা থেকে চলে আসছি, আমি গোয়েন্দার লোক আমি আপনার নামে থানায় ওসি কে অভিযোগ দিবো! না হলে আমাকে দেড় লক্ষ টাকা দেন! হান্নান চৌধুরি তার সাথে কথা বলতে চাইলে সে মাদ্রসায় আসতে বলে! পরে তারা মাদরাসায়ও আসে!
তারপর থেকে হান্নান চৌধুরী তার পেছনে বেশ কিছু নজরদারি লাগায়! বেশ কিছু প্রমাণাদি নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে এসে বিষয়টি জানান হান্নান চৌধুরী।
অভিযোগের মধ্যে ছিলো- মাদ্রাসার বাহিরে জুয়া খেলা, সিগারেট খাওয়া, মোবাইলে ক্যাসিনো, সারাক্ষণ বাহিরে ঘুরাফেরা করা, বখাটে ছেলেদের সাথে চলাফেরা! ইত্যাদি..। মাদ্রসা কর্তৃপক্ষ এ বিষয় জানার পর তার উপর নজরদারি বাড়ায়। বিভিন্ন উস্তাদের কাছে তার বিষয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগও ছিলো, তা বেরিয়ে আসে।
সব অভিযোগ এনালাইসিস করে গতকাল বুধবার পরীক্ষার হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মাদরাসার মুহতামিম। সেখানে তার কথাবার্তা সন্দেহভাজন মনে হলে তৎক্ষণাৎ মুহতামিম হোস্টেল কক্ষে তল্লাশির নির্দেশ দেন। তার সিট তল্লাশি করলে, এতে সরকারি মাদ্রাসার সিলেবাসের (আলিয়া) কিছু বই, খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের বাইবেল সহ আরো ছোটখাটো অনেকগুলো বই জব্দ পায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। যা জব্দ করা হয়। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে প্রথমত চুপ থাকে! পরবর্তী সময়ে শিক্ষকদের সাথে বাজে আচরণ করে।
এরমধ্যে তার বিগত বছরের নথি টেনে দেখা যায়, সে কোনো পরীক্ষা ও ক্লাসে অংশগ্রহণ করেনি। এ বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর 'ক্লাস ও পরিক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় সে মাদ্রাসার অনিয়মিত ছাত্র এবং ফরম ও সিট জালিয়াতির মত কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে তার নিকট বাইবেল পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী বলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এজন্য মাদ্রাসা সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তার বিরুদ্ধে। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনরকম মুখ খোলেনি।
You cannot copy content of this page