রবিবার- ২০ এপ্রিল, ২০২৫

চন্দনাইশ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম গ্রেপ্তার

বেনজীরের ক্যাশিয়ার চন্দনাইশ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম গ্রেপ্তার

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খিলক্ষেতের লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জসিম বেনজীরের ক্যাশিয়ার কিনা, তা আমি জানি না। তবে তাকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই মামলায় ভুক্তভোগীকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ রয়েছে। এটি জুলাই ও আগস্ট মাসের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটেছিল।

এদিকে খিলক্ষেত থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বিকেলে জসিম উদ্দিনকে লা মেরিডিয়ান হোটেলের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সময়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সহায়তা করে এবং পরে বাড্ডা থানার কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

জসিম উদ্দিন চট্টগ্রামের চন্দনাইশে জেসিকা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি কোটি কোটি টাকা খরচে মানবিক কাজ করলেও ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করছেন না! পদ্মা ব্যাংকের ৮৯ কোটি টাকা ঋণখেলাপির মামলায় গত ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল তাঁকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এরপরও সেই জসিম উদ্দিন চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

নির্বাচনের আগে জসিম উদ্দিন গত ১ মার্চ ব্যক্তিগত খরচে নিজ উপজেলার দরিদ্র ২০ তরুণ-তরুণীর বিয়ে দেন। এ উপলক্ষে চন্দনাইশের বদুরপাড়ার বাড়িতে এক হাজার মানুষের খাওয়ার আয়োজন করেন। গত রমজানে এলাকার ৫০ হাজার দরিদ্র পরিবারে পৌঁছে দেন ইফতারসামগ্রী। ২০২৩ সালের আগস্টে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০ হাজার পরিবারকে দেন খাদ্যসামগ্রী। এই সহযোগিতার পাশাপাশি এলাকার ১০০ মসজিদ পুনর্নির্মাণ ও ১০০ জটিল রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় পদ্মা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ৬০ কোটি ও সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখা থেকে ১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করলেও খেলাপির ঘরে তিনি লিখেছেন ‘প্রযোজ্য নহে’। তবে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের ঋণখেলাপির একটি মামলায় জেসিকা গ্রুপের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা সুলতানা জুহিকে গত ৩০ এপ্রিল পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের জজ মো. মুজাহিদুর রহমান। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ইস্যু হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ আহমেদ খান বলেন, ‘ঋণখেলাপির কারণে কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র তখনই বাতিল হয়, যখন সিআইবির রিপোর্টে তাঁর ঋণখেলাপির তথ্য পাওয়া যায়। কোনো খেলাপির তথ্য যদি সিআইবি রিপোর্টে না আসে, তাহলে সেটি তাদের সমস্যা। এর ওপর আমাদের হাত নেই।’ একই কথা বলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রামাণিক। তাঁর বক্তব্য, ‘প্রার্থিতা যাচাইকালে আর্থিক খাতের লোকজন ছিলেন। সিআইবি রিপোর্টে ঋণখেলাপি হিসেবে নাম না থাকায় জসিম উদ্দিনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা হয়েছে।

ঈশান/মখ/বেবি

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page