
চট্টগ্রামে পবিত্র শবে বরাত ঘিরে হঠাৎ বেড়েছে মুরগির দাম। এর মধ্যে কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে সর্বনিম্ন ২১০-২২০ টাকা মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। একইভাবে বেড়েছে সোনালি ও লেয়ার মুরগির দামও। যা সিন্ডিকেটের চালবাজি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর একাধিক খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে জানা গেছে এসব তথ্য। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। যা গত বৃহস্পতিবারও বিক্রয় হয়েছে প্রতিকেজি ১৯০-২০০ টাকায়।
একইভাবে সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রয় হচ্ছে ৩১০ টাকায়। আর লেয়ার মুরগি ২৫ টাকা বেড়ে বিক্রয় হচ্ছে ৩১৫ টাকায়। এক আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ২৮০ টাকায়। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৯০ টাকায়।
হঠাৎ মুরগির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। নগরীর চকবাজারে মুরগির কিনতে আসা ক্রেতা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, শবে বরাতে ফাতেহার জন্য আমি ২০০ টাকা নিয়ে এক কেজির মতো একটি মুরগি কিনতে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২২০ টাকা। এককেজির ছোট মুরগি পাইনি। তাই মুরগি না কিনে চলে যাচ্ছি। আগের হিসাবে মুরগি কিনতে এসে আমার মতো অনেকে সমস্যায় পড়েছেন।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ করে ব্রয়লার মুরগির দাম পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়িয়েছেন। বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে; তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বিক্রেতাদের অভিযোগ, খামারি থেকে তিন-চার হাত ঘুরে বাজারে মুরগি আসে। এই সিন্ডিকেটের হাত বদলের কারণেই মূলত দামটা বেড়ে গেছে।
নগরীর খুলশি ঝাউতলা বাজারে ‘আরাফাত পোল্ট্রি’ নামের মুরগির দোকানে কথা হয় ব্যবসায়ী ওয়াকিল আহমদের সাথে। তার মতে, শবে বরাতে প্রত্যেক বছরই দাম বাড়ে। এবারও বেড়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় এবার একটু কম। আমাদের কিছুই করার নেই। বাড়তি দরে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি।’
নগরীর বহদ্দারহাটের আজাদ পোল্ট্রি’র মালিক সোহাগ আজাদ বলেন, দাম মূলত ২-৩ দিন ধরে বাড়ছে। একসপ্তাহ আগে ১৮০-১৮৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ২১০ থেকে ২২০ টাকা। দাম কম-বেশির নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই। দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট আছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে এ থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় নেই।
এদিকে বহদ্দারহাটে বেশ কয়েকটি মুরগির দোকানে প্রতিকেজি ২০০ টাকায়ও বিক্রয় হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। তবে এসব দোকানে ওজনে কারচুপির অভিযোগও রয়েছে। তবে আজগর হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, আমরা সরাসরি গাড়ি থেকে মুরগি নামাই; তাই কেনা একটু কম। মুরগি যত হাত ঘুরবে ততই দাম বাড়বে। সিন্ডিকেটের তো অভাব নাই দেশে। এখানে ওজনে চুরির কোন বিষয় নেই।
আগ্রাবাদ কাচাবাজারের পাইকারি মুরগি ব্যবসায়ী মো. মুরাদ বলেন, ‘আমরা সরাসরি মুরগি কিনি না। ব্রোকার কিনে খামারির কাছ থেকে। এরপর আরো একহাত ঘুরে আসে আমাদের কাছে। আমরা যে দামে কিনি, তার ওপর সীমিত লাভে বিক্রি করি। এখানে দাম বাড়ানো বা কারসাজির সুযোগ নাই। এগুলো মিডল পার্টিরা করতে পারে।