
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ডুয়েল গেজ রেল প্রকল্পে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ও মালামাল ব্যবহার করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী মো. সেলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক জানিয়েছে, পৃথক দুটি অভিযোগের অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক বরাবরে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছেন সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক। চিঠিতে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সকল নথির সত্যায়িত ছায়ালিপি জমা দিতে বলা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী মো. সেলিম উদ্দিন উপ দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ প্রকল্পে পরিচালক (সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকম) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি উপ-পরিচালক (রিসেটেলমেন্ট) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে—কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের ৯টি স্টেশনের সংকেত ও টেলিকম যন্ত্রাংশ ক্রয়ের বিজ্ঞপ্তি, দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারগণ কর্তৃক দাখিলকৃত মূল্যতালিকাসহ সকল রেকর্ডপত্র, বিভিন্ন পর্যায়ে গঠিত কমিটির দালিকা ও কমিটির প্রতিবেদন, নেগোসিয়েশন, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ, পরামর্শকসহ অন্যান্যদের নিয়োগ সার-সংক্ষেপ, বিভিন্ন পর্যায়ের অনুমোদন, চুক্তি, অর্থসংস্থান, পেমেন্ট, নোটশিটসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি দিতে। এছাড়া মো. সেলিম উদ্দিনের এনআইডি, পাসপোর্ট কপি, স্থায়ী-বর্তমান ঠিকানাসহ মুঠোফোন নম্বরও দিতে বলা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের নয়টি স্টেশনের সংকেত ও টেলিকম যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আনার কথা থাকলেও মালামালগুলো ছিল নিম্নমানের। যা ইতোমধ্যেই নষ্ট হওয়ার পথে। চুক্তি অনুযায়ী মানসম্পন্ন এয়ারকন্ডিশনার দেওয়া কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানের এসি। নয়টি স্টেশনের মোট ১৮টি মেকানিক্যাল পয়েন্ট নিম্নমানের লোকাল যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি হওয়ায় সিগন্যালিং সমস্যার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ব্লক কমিউনিকেশনের জন্য এক্সেল কাউন্টারও স্থাপন করা হয়নি।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির টাকায় চট্টগ্রামের খুলশী ও কাজির দেউরিতে ফ্ল্যাট এবং ঢাকার বসুন্ধরায় জমিসহ বিপুল সম্পত্তির তথ্য অনুসন্ধান করছে দুদক। অভিযোগ রয়েছে, রেল ভবনে দুই শীর্ষ কর্মকর্তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মো. সেলিম উদ্দিন চারটি লাভজনক পদে দায়িত্ব পান। প্রকল্পের টাকা হরিলুট ও নিয়মিত অফিস করেন না তিনি। শুধুমাত্র দরপত্র সংক্রান্ত ফাইল স্বাক্ষর করতে উপস্থিত হন অফিসে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল কার্যালয়ে একাধিকবার গিয়েও মো. সেলিম উদ্দিনের সাক্ষাৎ মেলেনি। প্রতিবারই তিনি কার্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। পরে সেলিম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, আমরা প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছি। কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছি, আমাদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।









































